মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
ফুঁসছে পদ্মা-কপোতাক্ষ

তিন গ্রাম প্লাবিত ভাঙছে ঘরবাড়ি

প্রতিদিন ডেস্ক

তিন গ্রাম প্লাবিত ভাঙছে ঘরবাড়ি

জোয়ারের কারণে সাতক্ষীরার আশাশুনি কুড়িকাউনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ গতকাল ভেঙে গেছে। এর ফলে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকায় তীব্র ভাঙনের শিকার হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচ কিলোমিটার নদী এলাকা।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাউনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় প্রবল জোয়ারের চাপে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ ভেঙে তিন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক মত্স্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। গতকাল ভোররাতে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাউনিয়া গ্রামের ৭/২ পোল্ডার সংলগ্ন এলাকায় কপোতাক্ষের প্রায় ১৫০  ফুট বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, আগে থেকেই বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। প্রবল জোয়ারের চাপে হঠাৎ করেই ভোর রাতে বাঁধটি নদীগভে বিলীন হয়ে যায়। এতে পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক মত্স্য ঘের ও ফসলি জমি। তবে স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছায় বেড়িবাঁধটি সংস্কার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বেড়িবাঁধটি সংস্কার করা না গেলে পরবর্তী জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণেই প্রতাপনগর ইউনিয়নবাসীর এই দুর্দশা। বারবার বলা সত্ত্বেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেননি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গত ১৫ দিন ধরে জেলার ৬ ইউনিয়নে এ নদী ভাঙন চলছে। ভাঙনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর, চরবাগডাঙ্গা, দেবীনগর ও আলাতুলী এবং শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ও পাকা ইউনিয়নের ব্যাপক এলাকা নদীগভে তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে ৪৫০ ঘরবাড়ি ও ২০০ একর ফসলি জমি, আমবাগান ও কুল বাগান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে নদী ভাঙন। প্রতিদিন নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, আমবাগান, কুলবাগান, বসতবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হবে হাজার হাজার পরিবার। প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে চরাঞ্চলের ৭টি ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ও পাকা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই কমবেশি নদী ভাঙনের শিকার। আবার অনেকেই নদীতে বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এরই মধ্যে অন্যত্র চলে গেছেন।

সর্বশেষ খবর