বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফেনীর ছয় লেন ফ্লাইওভার আজ উদ্বোধন

ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীতে আজ উদ্বোধন হচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেন মহিপাল ফ্লাইওভার। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করবেন। এরপরই ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

দেশের ইতিহাসে মহিপালের এই ফ্লাইওভারটিই প্রথম ছয় লেন ফ্লাইওভার। সংশ্লিষ্টরা জানান, এটি প্রথমে চার লেন হওয়ার কথা থাকলেও, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ছয় লেন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ১ এপ্রিল ২০১৫। এই বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ থাকলেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এর নির্মাণ কাজ ছয় মাস আগেই শেষ হয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের লাইফ লাইন হিসেবে খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে নবনির্মিত ছয় লেন ফ্লাইওভারটির নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ১৫৮ কোটি টাকা নির্ধারণ কর হলেও পরবর্তীতে তা ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকায় বর্ধিত হয়। মূল ফ্লাইওভারটির দৈর্ঘ্য ৬৬০ মিটার। প্রস্থ ২৪.৬২ মিটার। সার্ভিস রোডের দৈর্ঘ্য ১৩৭০ মিটার, প্রস্থ ৭.৫ মিটার। এপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ১১৬০ মিটার। সাইড ড্রেনের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১০ মিটার। ফুটপাথের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১০ মিটার। সর্বমোট পিছি গার্ডার ১৩২টি। সর্বমোট স্টেন ১১টি। সর্বমোট পিয়ার ২০টি। ৬৬০ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটিতে ১১টি স্পেনে, রেম্প রয়েছে ২৯০ মিটার। মূল বিশ্বরোড থেকে একটি সড়ক ফ্লাইওভারে যাবে, অপরটি সাইড দিয়ে এসে ফেনী শহর ও ফেনী নোয়াখালী সড়কে যাবে, যাকে লিংক রোড বলা হয়। এই ফ্লাইওভারের আলাদা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে— এটি ওপরে ছয় লেন ও নিচে চার লেন। সে হিসেবে মহাসড়কের মহিপালের এই অংশটি হবে ১০ লেনের। ফ্লাই ওভারটির নির্মাণ কাজ পায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের আন্ডারে ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সটেকশন ব্যাটালিয়ন। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে মেসার্স আবদুল মোমেন লিমিটেড। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বাংলাদেশের প্রথম ছয় লেন ফ্লাইওভার এই প্রথম ফেনীতে নির্মাণ হলো। এখানে উল্লেখযোগ্য দিক হলো— সেনাবাহিনী কাজটি যথাসময়ের ছয় মাস আগেই শেষ করেছে। মহাসড়কে সবগুলো ফ্লাইওভার ফোর লেন করা হয়েছে। ফেনীর মহিপালের চৌরাস্তা দিয়ে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল করায় এখানে নিত্য যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ফ্লাইওভারটি ছয় লেনের হয়েছে। ফ্লাইওভারটির ফলে এখানে যানজট অনেকটা নিরসন হবে। ঢাকা-চট্টগ্রামের গাড়ি ছাড়াও মহিপাল হয়ে নোয়াখালীর ও লক্ষ্মীপুর গাড়ি চলাচল করে। তাই এ স্থানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকত। তবে ফ্লাইওভার নির্মাণের ফলে যানজট লাঘব হবে। ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী জানান, মহিপালের ফ্লাইওভার এলাকার কাউন্সিলর আমি। এখানে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটত। ফ্লাইওভারের ফলে আশা করা যাচ্ছে দুর্ঘটনা অনেকাংশে লাঘব হবে। ব্যবসায়ীরাও আশা করছেন, ফ্লাইওভারটি নির্মাণের ফলে পাল্টে যাবে ফেনীর চেহারা। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেও উন্নয়নের দ্বার খুলবে।

সর্বশেষ খবর