সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান বিএনপির শোকরানা না জাকির

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান বিএনপির শোকরানা না জাকির

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বগুড়া-১ আসনে আগাম প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিজ দলের পক্ষে তারা ভোট চাইছেন, গণসংযোগ করছেন। এ আসনে আগাম প্রচারণায় উড়ছে নৌকার পাল আর দুলছে ধানের শীষ।

বগুড়া জেলার সাতটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-১ আসন। যমুনা ও বাঙ্গালি নদী বিধৌত দুটি উপজেলা নিয়ে এ আসন।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি আবদুল মান্নান এবং বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী মো. শোকরানা। বগুড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন সিরাজুল ইসলাম সুরুজ। এরপর আর আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারেনি। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির ওয়াজেদ হোসেন তরফদার, ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির কর্নেল (অব.) আবদুল মোমিন মণ্ডল, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বিএনপির ডা. হাবিবুর রহমান এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে কাজী রফিকুল ইসলাম বিএনপির মনোনয়নে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সংসদের সাবেক সহসভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তবে টানা তিনবার হারার পরও তিনি মনোবল হারাননি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনে আবদুল মান্নান বিএনপি প্রার্থী মো. শোকরানাকে কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের পর আবদুল মান্নানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আসনটি পায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে নামবেন আবদুল মান্নান। টানা দুই মেয়াদে এই আসনের এমপি হিসেবে তিনি এলাকার মানুষের বেশ আস্থা অর্জন করেছেন। তাঁর মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত বলে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাদের মতে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপির দুর্গে ফাটল ধরিয়ে দেন আবদুল মান্নান। এই জয়ে দলের উপর মহল তার বিষয়ে বেশ আশাবাদী। দুই মেয়াদে নদী ভাঙন রোধে, ধর্মীয় উপাসনালয়, ভূমিহীন মানুষের, দুস্থ, অসহায়, সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। নির্বাচনী এলাকায় জনসেবামূলক কাজ করার জন্য তিনি ভোটারদের আস্থা অর্জন করেছেন। অন্যদিকে, আসনটি পুনরুদ্ধারে তৎপর হয়েছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. শোকরানা। তিনি আগামী নির্বাচনেও মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী। ভোটারদের সঙ্গে তিনি নানা বিষয়ে মতবিনিময় করছেন। শোকরানা ছাড়াও সোনাতলা উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির এবং বগুড়া জেলা বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরীর নামও প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, বগুড়ার সাতটি আসনের মধ্যে সারিয়াকান্দি সোনাতলা-১ আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনে আগামী নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হবে বলে আশা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর