বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ম্যাজিস্ট্রেট নয়

মির্জা মেহেদী তমাল

ম্যাজিস্ট্রেট নয়

মামলার তদবির করতে গিয়ে অভিনয়ের সবটাই ছিল পরিপাটি কিন্তু বিধিবাম! ‘সারেন্ডার’ বলতেই বেরিয়ে এলো থলের বেড়াল। ‘সারেন্ডার’ না বলে ‘স্যালেন্ডার’ উচ্চারণ করতেই ধরা পড়েন নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেওয়া প্রতারক জুয়েল রানা। গত ৭ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ঘটে এ ঘটনা। আদালতের নাজির সাকিলুর রহমান জানান, ওই প্রতারকের কাছ থেকে ভুয়া প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে।

জানা যায়, টাঙ্গাইলের সদর থানার বিশাদ বেটকা মুন্সিপাড়ার আবদুর রউফের ছেলে জুয়েল রানা। জুয়েল নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট (সহকারী জজ) পরিচয় দিয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) জাহিদুল কবিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য আসেন। সিএমএম তাঁকে খাস কামরায় ডেকে পাঠান। তিনি নিজেকে ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত বলে জানান।

একপর্যায়ে জুয়েল রানা মামলার আসামির জামিনের বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেন। কথোপকথনের সময় তিনি ‘সারেন্ডার’ না বলে ‘স্যালেন্ডার’ শব্দ উচ্চারণ করেন। সিএমএমের এতে সন্দেহ হয়। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেন। এরপর ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষার রোল কত তা জানতে চাইলে পকেট থেকে একটি প্রবেশপত্র বের করে দেন। তাতে রোল নম্বর লেখা ৮২০৩।

ওই রোল নম্বর যাচাই করে দেখা যায়, ওই রোল নম্বরের পরীক্ষার্থীর নাম ছিল আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি নর্দান ইউনিভার্সিটির ছাত্র। বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। পরে জেরার এক পর্যায়ে সোহাগ স্বীকার করে যে, প্রতারণার জন্যই আবদুল্লাহ আল নোমানের রোল নম্বর ব্যবহার করে সেখানে নিজের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা বসিয়ে ব্যবহার করছেন। পরে সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি প্রতারণা মামলায় রয়েছে।

রাজধানীর মিরপুর থেকে বাদশা আলমগীর (৪৫) নামে এক ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে আটক করেছে পুলিশ। মিরপুর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিরপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস থামিয়ে কাগজ দেখতে চান বাদশা আলমগীর। তখন বাসচালক কাগজ দেখাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারধর করেন তিনি। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে দায়িত্বরত পুলিশ এসে তার পরিচয় জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে বাদশা আলমগীর একজন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট। পরে তাকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, দুপুরে বাদশা আলমগীর নামে এক ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এভাবে সচেতন থাকলে এই সংখ্যা কমতে বাধ্য।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর