মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পোস্তায় শুরু হয়েছে চামড়া কেনাবেচা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পোস্তায় শুরু হয়েছে চামড়া কেনাবেচা

সরকার, ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের সঙ্গে গত রবিবার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর সমঝোতার দর-দামেই চামড়া কেনাবেচা শুরু হয়েছে রাজধানীর লালবাগের পোস্তায়। আড়তদাররা বলেন, বৈঠকে ট্যানারি মালিকদের পাওনা পরিশোধের আশ্বাসের পর তাঁরা চামড়া বিক্রি শুরু করেছেন। তবে তাদের আশঙ্কা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্যানারি মালিকরা পাওনা পরিশোধ না করলে এ খাতে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে। গতকাল রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা বলছেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুই দিন চামড়া বেচাকেনা হয়নি। সোমবার থেকে সারা দেশে পুরোদমে চলছে চামড়া কেনা। সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে এমন দাবি তাদের। বাকি এবং নগদ মূল্যে চামড়া ছেড়ে দিচ্ছেন আড়তদাররা। গতকাল সকালে পোস্তার আড়ত যমুনা ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা গেছে, আড়ত থেকে চামড়া সংগ্রহ করছেন সালামা ট্যানারির মালিক ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ। জানতে চাইলে তিনি জানান, এই আড়তের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পিস কাঁচা চামড়া আছে। সরকারের নির্ধারিত দামেই কিনেছি। আর এর লেনদেনও হবে প্রচলিত নিয়মেই। যমুনা টেড্রার্সের কয়েকটি দোকানের পরই হাজী মো. সাদাত হোসেনের আড়ত। দোকানে উপস্থিত জয়নাল আবেদিন জানান, পাওনা টাকা নিয়ে গত রবিবার সভা হয়েছে। সমঝোতাও হয়েছে। তাই আজ (গতকাল) ট্যানারি মালিকরা মাল কিনতে আসছেন। তিনি বলেন, সরকার সুনজর দিয়েছে। তাই দরদাম নিয়ে ফয়সালাও হবে। তবে গরিবের হক মারা গেল, প্রান্তিক পর্যায়ের তারা কিছুই পেল না- এটা ঠিক হয়নি। এ সময় উপস্থিত অন্য আড়তের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করে তিনি জনান, যারা তাদের হক মেরেছে; তাদের রিমান্ডে নেওয়া উচিত। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বড় বড় সভা হয়, গবিরের হকের তো কোনো ফয়সালা হয় না।’ এ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক রিকশা চালক বলেন, ‘ভাই লিখে দিয়েন, উন্নয়নের জোয়াড়ে এবার চামড়া ভেসে গেছে।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, এতদিন জিম্মি অবস্থায় ব্যবসা করেছি। ট্যানারি মালিকদের কছে পাওনা চাইলে তারা ভালো ব্যবহার করতেন না। আশাকরি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ২২ আগস্ট পাওনা টাকা নিয়ে কোনো সুরাহা হবে। এটা না হলে আবারও গভীর সংকট তৈরি হবে। তিনি বলেন, এই সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, চামড়া নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট হয়নি। সমঝোতার ভিত্তিতেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বলেছি আমাদের কাছে টাকা নেই। অনেকেই ধারদেনা করে চামড়া কিনেছেন, অনেকেই কিনতে পারেননি। তবে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে পোস্তায় চামড়া এলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হতো। আমরা হয়তো সেগুলো কিনতে পারতাম না।

সর্বশেষ খবর