বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কাশিমপুর রাজবাড়ি ধ্বংসের মুখে

নওগাঁ প্রতিনিধি

কাশিমপুর রাজবাড়ি ধ্বংসের মুখে

মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ মাথায় নিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নওগাঁর রানীনগরের কাশিমপুর রাজবাড়িটি। পাগলা রাজার বাড়ি বলে পরিচিত রাজবাড়ির প্রধান অংশের দুর্গা মন্দিরের কিছু অংশ এখন শুধুই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই শেষ অংশটুকুও এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মৃত প্রায় রাজবাড়ির নির্মাণ  শৈলী, নকশা ও ডিজাইন এখনো দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। জানা গেছে, কাশিমপুরের পাগলা রাজা ছিলেন নাটোরের রাজার বংশধর। এই অঞ্চলের রাজত্ব দেখভাল করার জন্যই মূলত এখানে তৈরি করা হয়েছিল রাজবাড়ি আর সূত্রপাত করা হয়েছিল রাজার শাসন। তবে এই অঞ্চলে কবে রাজার শাসন প্রবর্তন শুরু হয়েছিল তা জানা যায়নি। শ্রী অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী বাহাদুর ছিলেন এই রাজত্বের শেষ রাজা। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রাজবংশের সবাই এই রাজত্ব ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। শুধু ছোট রাজা শক্তি প্রসন্ন লাহিড়ী বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই রাজবাড়িতে বসবাস করেছিলেন। একসময় তিনি ও তার পরিবার এই রাজবাড়ির স্টেটের অঢেল সম্পদ রেখে ভারতে চলে যান। রাজবাড়ির এলাকা ছিল ২ একর ১৯ শতক জমি নিয়ে। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই রাজবাড়িটির নিদর্শনসমূহ দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে আজ প্রায় ধ্বংসের পথে।

রাজবাড়ির মূল ভবনের মাঝখানে শুধু দুর্গা মন্দিরের সামনের চারটি গম্বুজসহ কিছু অংশ ক্ষতবিক্ষত প্রাচীর ও দেয়াল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। উত্তর দিক দিয়ে রাজবাড়িতে প্রবেশ করার পথেই রয়েছে শিব, রাধাকৃষ্ণ ও গোপাল মন্দির। চুন, সুড়কি ও পোড়া মাটির ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই মন্দিরগুলো। মন্দিরগুলোর মধ্যে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরটি সুউচ্চ হলেও অপর দুটি মন্দিরের নির্মাণ কৌশল একই নকশার। বর্তমানে এই তিনটি মন্দির স্থানীয় সনাতন ধর্মের লোকেরা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন ও পূজা-অর্চনা দিয়ে আসছেন।

কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বলেন, দেশ স্বাধীনের পর রাজার বংশধররা কয়েক দফায় এই রাজত্ব ছেড়ে ভারতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ায় স্থানীয় কিছু ব্যক্তি রাজার এই বিশাল সম্পত্তি দখল করে নেয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে এই রাজবাড়ির অবশিষ্ট অংশগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণ করে একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর