রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

৪১টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান ৪০৬ জন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

৪১টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান ৪০৬ জন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন সামনে রেখে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড থেকে প্রায় চার শতাধিক পুরুষ-মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান। এখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে ১০ জনের মতো দলীয় প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন। প্রত্যেকে নগরীর উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের সেবা করতেও আগ্রহী। এখানে দল একজনকেই মনোনয়ন দেবে। অন্যদিকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কেউ কেউ দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী, ব্যক্তিগত ইমেজ, তৃণমূল নেতাদের কৌশলী সমর্থন, ক্ষমতার দাপটসহ নানাবিধ বিষয় বিবেচনায় এনেই নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে নানা গুঞ্জন রয়েছে। সব মিলে প্রতিটি ওয়ার্ডেই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলীয়ভাবে কাউন্সিলর পুরুষ-মহিলা পদে সর্বশেষ ৪০৬ জন ফরম জমা দিয়েছেন। এতে দলই নির্ধারণ করবে কাকে দলের মনোনয়নপত্র দেওয়া হবে। দলের মনোনয়ন বোর্ড এবং দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে সেটা সংগঠন বা দলের নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তাছাড়া  সব বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে এখানে দলের জন্য ত্যাগ, নির্যাতিত, যোগ্য, মামলা-হামলার শিকারসহ সব বিষয় বিবেচনায় আনতে পারেন এবং এটি দেশের সর্ববৃহৎ সংগঠন। সেই ক্ষেত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারেন। সবকিছু বিবেচনা করেই কাজ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। নগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য নেছার আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির মাঠে আছি। কোনো সময় দল থেকে কিছু চাইনি। শুধু পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। বানানো হয়, অমুকের মানুষ, তমুকের মানুষ। দলের জন্য কিছুই কি করিনি? ত্যাগ, নির্যাতন, হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। এখনো পর্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনীতি করছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন এলেই একাধিক প্রার্থী বের হয়ে আসে। দলের দুঃসময়ে তেমন কাউকে দেখা যায় না। তবে আশা করছি, দল কাউন্সিলর পদে আমাকে বিবেচনা করলে সততার সঙ্গে কাজ করে যাব। না দিলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত একজন ছোট কর্মী হিসেবে দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। একই কথা বললেন জামাল খান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা ফরহাদুল ইসলাম রিন্টু। চসিকের ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. মোবারক আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করে আসছি। সাধারণ মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠকের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবাসহ নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করে আসছি। তাছাড়া এলাকায় দলের প্রতিটি কর্মকান্ডে জড়িত আছি। অতীতের উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ নানাবিধ সফলতার বিষয় বিবেচনা করে আশা করছি আবারও দল মূল্যায়ন বা মনোনয়ন দেবে। তবে এখানে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ড থেকেই একাধিক দলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়ছেন। একই কথা বললেন ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মনোনয়নপ্রত্যাশী ইলিয়াছ উদ্দিন বলেন, সারা দেশে তারুণ্যের একটা আওয়াজ উঠেছে। এই তারুণ্যের আওয়াজ এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সমাজসেবায়ও কাজ করতে আগ্রহী। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাজ করতে এই নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আশা করছি, দল বা মনোনয়ন বোর্ড সবকিছু বিবেচনা করবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুরুষ-মহিলা কাউন্সিলর পদে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, দলের পক্ষ থেকে যারা মনোনয়ন চেয়েছেন, এদের অনেকেই নানাভাবে বিতর্কিত। আবার অনেকেই ত্যাগী এবং যোগ্য প্রার্থীও রয়েছেন। প্রায় একই ওয়ার্ড থেকে দলের একাধিক যোগ্য, বিতর্কিত নেতারাও মনোনয়ন চেয়েছেন। এদের নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডেই চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও। উঠে আসছে প্রার্থীদের অতীত কর্মকান্ডগুলো। এখানে অনেকের বিরুদ্ধে জমি দখল, অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা কারণে দুদকের তদন্তও চলছে। রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারিও।

সর্বশেষ খবর