সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি সুনামগঞ্জ

আওয়ামী লীগের কোন্দল ঐক্যের প্রলেপ মাখা, প্রকাশ্য বিএনপিতে

মাসুম হেলাল, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত থাকলেও ধরন কিছুটা ভিন্ন। বাইরে ঐক্যের প্রলেপ মাখিয়ে ভিতরের অবস্থা লুকানোর চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপির দ্বিধাবিভক্তি প্রকাশ্য। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলে বড়মাত্রার প্রভাব না পড়লেও বিরোধী দল বিএনপি আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েছে নিজেদের বিভেদের কারণে।

উপজেলা ও পৌরসভাগুলোয় কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দুই উপজেলায় কমিটি গঠনের পর দলের বিবদমান পক্ষগুলোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিত হয়ে যায় পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। মেয়দোত্তীর্ণ অপর ১২টি ইউনিটের কমিটি কবে হবে তা কেউই জানে না। দলীয় সূত্রমতে, উপজেলাগুলোয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে সংসদ সদস্যদের দ্বন্দ্বে ভেস্তে যায় উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। কমিটি গঠনে দুই পক্ষের কেউই কাউকে ন্যূনতম ছাড় দিতে নারাজ। এ অবস্থায় কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দলের হাইকমান্ড। তবে দ্বন্দ্ব নিরসনে ভিতরে ভিতরে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের মধ্যে সমন্বয় করতে যে কোনো সময় সুনামগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের ঢাকায় ডেকে পাঠাতে পারেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় জেলা সহসভাপতি আপ্তাব উদ্দিন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে বলেন, আমাদের মধ্যে চরম গ্রুপিং রয়েছে। এটা লুকালে ঝামেলা বাড়বে ছাড়া কমবে না। দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্রকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা আসে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাব। বাকি ১২টি ইউনিটে শিগগিরই কমিটি গঠনের কাজ শুরুর পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা দেশ চালাবেন, নেতারা দল চালাবেন। তৃণমূলে দল শক্তিশালী হলে এই সুফল এমপিরাই ভোগ করবেন। সুনামগঞ্জে বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন ‘সিনিয়র বনাম জুনিয়র’-এর লড়াইয়ে সরগরম। রাজনীতিতে সিনিয়র বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুল হক আছপিয়ার নেতৃত্বাধীন গ্রুপ মেনে নিতে পারছে না সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলামের নেতৃত্বকে। এই বিভক্তির কারণে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিগত কয়েক মাস ধরে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছেন আলাদাভাবে। তলে তলে উত্তাপ ছড়াচ্ছে দলীয় কোন্দল। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ও পৌরসভার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠনের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন বলেন, দেশে কর্তৃত্ববাদী সরকার চলছে। রাজনীতি এখন বিএনপির জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। আমরা দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি মানুষের ভোটাধিকারসহ গণতান্ত্রিক সব অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর