বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘণ্টায় মৃত্যু ২৫০, শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভারত ব্রাজিল ও মেক্সিকো

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ লাখ ১০ হাজার। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক হিসাবে বলা হয়েছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় মারা যাচ্ছেন প্রায় ২৫০ জন মানুষ। আর প্রতি ১৫ সেকেন্ডে মারা যাচ্ছেন একজন করে। এভাবে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল ও মেক্সিকোতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮৯ লাখের কাছাকাছি। আগের দিন বুধবার সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে ব্রাজিলে। দেশটিতে এদিন ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ১ হাজার ৩৯৪ জনের এবং নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৬ হাজার ৪১১। যুক্তরাষ্ট্রে এদিন মৃত্যু ছিল ১ হাজার ৩৬২ জন এবং নতুন আক্রান্ত ছিল ৫৪ হাজার ৫০৪ জন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে মৃত্যু ছিল ৮৪৯ জন এবং আক্রান্ত ছিল ৫১ হাজার ২৮২ জন। মেক্সিকোয় মৃত্যু ছিল ২৬৬ জনের এবং নতুন আক্রান্ত ছিল ৪ হাজার ৪৬৭ জন। এ ছাড়া এদিন রাশিয়ায় মৃত্যু ছিল ১৪৪ জন এবং নতুন আক্রান্ত ছিল ৫ হাজার ১৫৯ জন। দক্ষিণ আফ্রিকায় মৃত্যু ছিল ৩৪৫ জন ও আক্রান্ত ছিল ৪ হাজার ৪৫৮ জন। যুক্তরাজ্যে মৃত্যু ছিল ৮৯ জন ও আক্রান্ত ছিল ৬৭০ জন। সৌদি আরবে মৃত্যু ছিল ৩৫ জন ও আক্রান্ত ছিল ১ হাজার ৩৬৩ জন। পাকিস্তানে মৃত্যু ছিল ১৫ জন ও আক্রান্ত ছিল ৪৩২ জন। এদিন ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ছিল ৬ হাজার ২৯৭ জন এবং নতুন আক্রান্ত ছিল ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭১ জন। বাড়ছে আরেক ভয়ঙ্কর রোগ : করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যস্ত বিশ্বে থাবা বসাচ্ছে আরেক ভয়ঙ্কর সংক্রামক রোগ যক্ষ্মা। যে রোগ ছড়িয়ে আছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তেই। বিশ্বের সবচেয়ে ছোঁয়াচে এবং হন্তারক এ  রোগ প্রতিবছরই প্রায় ১৫ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে  দেওয়া লকডাউনে মানুষের চলাফেরা, ভ্রমণসহ ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ার ফলেও যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। এসব কারণে বেড়ে চলেছে টিবি সংক্রমণ। আগামী কয়েক বছরে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে গবেষকরা আশঙ্কাও করছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ বছর টিবির সঙ্গে সঙ্গে এইচআইভি/এইডস এমনকি ম্যালেরিয়ারও বিস্তার ঘটে চলেছে। করোনাভাইরাস আতঙ্ক এবং ক্লিনিকগুলোতে রোগীর বাড়তি চাপের কারণে টিবি, এইচআইভি, ম্যালেরিয়ার বহু রোগীই চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তার ওপর বিমান এবং সমুদ্রপথে পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ওষুধ সরবরাহও অনেকটাই কমে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা, এইচআইভি এবং ম্যালেরিয়া কর্মসূচির প্রায় ৮০ শতাংশ সেবাই বিঘিœত হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, মহামারীর কারণে এখন যক্ষ্মার রোগী ক্লিনিকেও কম যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে বিশ্বের অন্তত ১২১টি দেশের ক্লিনিকে টিবি রোগী কমেছে। এই ধারা চলতে থাকলে বিশ্বের মারাত্মক এই রোগটির বিরুদ্ধে এ যাবৎ কষ্টকর  যে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে তা করোনাভাইরাসের কারণে কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশক পিছিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের এক মূল্যায়নে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে তিন মাসের লকডাউন এবং পরের ১০ মাসে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার  চেষ্টা হলে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬৩ লাখ নতুন যক্ষ্মা রোগী যুক্ত হবে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুও হতে পারে ১৪ লাখ মানুষের।

সর্বশেষ খবর