বৃহস্পতিবার, ৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় ব্যতিক্রমী ফলের চাষ

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গায় ব্যতিক্রমী ফলের চাষ

গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে মাল্টা। ছোট ছোট গাছে ঝুলে আছে অসংখ্য থাই জাতের পেয়ারা। এ দৃশ্য চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বালীহুদা গ্রামের। এই গ্রামের বাসিন্দা মিঠু বিশ্বাস নিজ হাতে পরম মমতায় গড়ে তুলেছেন এসব ফলের বাগান। এর পাশেই আছে কাগুজি লেবু, ড্রাগন ফল আর উন্নত জাতের কাশ্মীরি কুলের বাগান। ব্যতিক্রমী এসব চাষ করে ইতিমধ্যেই সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন মিঠু বিশ্বাস। তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এখন দেশের মাটিতে অর্থকরী এসব চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, প্রতি বছরই চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে মাল্টা, থাই পেয়ারা, ড্রাগন ফলের চাষ। জেলার শিক্ষিত তরুণ যুবকরা এসব চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। লেখাপড়া শিখে অনেকেই চাকরি না খুঁজে যোগ দিচ্ছেন কৃষি কাজে। এ কারণে জেলায় ব্যতিক্রমী চাষও বাড়ছে বছর বছর। তাদেরই একজন জীবননগর উপজেলার বালীহুদা গ্রামের তরুণ চাষি মিঠু বিশ্বাস। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বছর চারেক আগে ভাগ্য বদলাতে যোগ দেন কৃষি কাজে। মিঠু বিশ্বাস বলেন, চাকরিতে সীমিত আয়ের জীবন। স্বাধীনতা কম। কৃষিতে ব্যক্তি স্বাধীনতার পাশাপাশি রয়েছে অধিক আয়ের সুবর্ণ সুযোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া কৃষিতে তেমন ঝুঁকিও নেই। এ কারণে তিনি চাকরি ছেড়ে কৃষিতে যুক্ত হয়েছেন।

 তিনি ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন তার কৃষি খামার। এ খামার থেকে তিনি বছরে অন্তত ২০-২৫ লাখ টাকা লাভ করতে পারছেন।

জীবননগর শহরের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম মিঠুর মিশ্র ফলের বাগান দেখতে এসেছেন। তিনি জানান, জেলার অনেক তরুণই ব্যতিক্রমী কৃষির মাধ্যমে সফল হচ্ছেন। মিঠুর সাফল্য দেখতেই তিনি তার বাগানে এসেছেন; দেখে তিনি  অনুপ্রাণিত হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চুয়াডাঙ্গার চাষিরা বরাবরই ‘ইনোভেটিভ ফার্মার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছেন। সে ধারাবাহিকতায় এ জেলায় অনেক ফসলই দেশের মধ্যে প্রথম চাষের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া কৃষির জন্য বিশেষ উপযোগী। এ কারণে স্থানীয় অনেক শিক্ষিত তরুণ অর্থকরী কৃষিতে ঝুঁকছেন। তারা ব্যতিক্রমী চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। অন্যদিকে আমদানিনির্ভর অনেক ফল-ফসল এখন দেশের মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় এসবের আমদানিনির্ভরতাও কমছে। চুয়াডাঙ্গার কৃষি বিভাগ বরাবরই কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর