রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

নোয়াখালীতে সেই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণ মামলা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় চাচিকে ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার সেই যুবলীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান শরীফের বিরুদ্ধে আরও একটি ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী (২৭)।

শুক্রবার রাতে উপজেলার নোয়াখোলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে চাটখিল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেন। মুজিবুর রহমান শরীফ নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি। তিনি একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াতির বাড়ির রফিকুল ইসলাম খোকনের ছেলে। বর্তমানে পুলিশের দায়ের করা অস্ত্র এবং চাচির দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় শরীফ চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূর স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর গৃহবধূর ছেলে-মেয়ে নানার বাড়িতে ছিল। রাতে খাবার খেয়ে ছোট ভাইসহ ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। রাত আনুমানিক ২টার দিকে প্রতিবেশী শরীফ জানালা ভেঙে তার দিকে অস্ত্র তাক করে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খুলবে না বলার সঙ্গে সঙ্গে শরীফ ঘরে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। একপর্যায়ে ভয়ে দরজা খুলে দিলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শরীফ ঘরের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই গৃহবধূকে। চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শরীফের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের আরেক গৃহবধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উল্লেখ্য, ২১ অক্টোবর বুধবার ভোর ৫টার দিকে কাতার প্রবাসীর স্ত্রী এবং শরীফের দূরসম্পর্কের চাচি নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। শরীফ সুকৌশলে গৃহবধূর টিনশেড ঘরে প্রবেশ করে দুই শিশুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন এবং উলঙ্গ করে ছবি-ভিডিও ধারণ করে চলে যান। অভিযুক্ত শরীফ ওই গৃহবধূর দূরসম্পর্কের ভাসুরের ছেলে। পরে এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চাটখিল থানায় মামলা করলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বুধবার বেলা ৩টার দিকে তাকে উপজেলার নোয়াখোলা ইউনিয়নের ইয়াছিন হাজী বাজার থেকে আটক করে। পরে শরীফকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ উপজেলার নোয়াখোলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইয়াছিন হাজী বাজার- সংলগ্ন ওয়াতির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার তথ্যমতে বসতঘর থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, বিয়ারের খালি বোতল, ৫টি মোবাইল, ১ প্যাকেট কনডম ও ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করে পুলিশ। এদিকে এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে শরীফ গড়ে তুলেছেন এলাকায় বিশাল বাহিনী। তার নির্দেশে এ বাহিনী এলাকায় মাদক, ইয়াবা, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ করে আসছে। সরকারি দলের মেয়রসহ দুজন প্রভাবশালী নেতার ছত্রচ্ছায়ায় শরীফ বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। শরীফের বিরুদ্ধে থানায় আটটি মামলা রয়েছে। এই বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

সর্বশেষ খবর