বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
দুই দলের মহানগরের রাজনীতি

আওয়ামী লীগে কাউন্সিলর নিয়ে সভাপতি ও সম্পাদকের দ্বন্দ্ব

রফিকুল ইসলাম রনি

আওয়ামী লীগে কাউন্সিলর নিয়ে সভাপতি ও সম্পাদকের দ্বন্দ্ব

২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা। এ সভায় কাউন্সিলরদের অংশগ্রহণ নিয়ে মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

নেতারা জানিয়েছেন, ওই সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির কাউন্সিলরদের রাখতে চান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির চান বর্ধিত সভায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগরীর কার্যনির্বাহী সংসদ, থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত হবেন। যেসব কাউন্সিলর মহানগরী কিংবা থানা-ওয়ার্ডের শীর্ষপদে আছেন তারা বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অন্য কাউন্সিলরদের রাখার সুযোগ নেই।

মহানগরী নেতারা আরও জানান, দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরকে পদ দেওয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা ক্ষুব্ধ হন মহানগরীর শীর্ষ নেতাদের ওপর। কারণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত আছে মহানগরী কার্যনির্বাহী সংসদ ও থানা-ওয়ার্ডের শীর্ষপদে কাউন্সিলরদের রাখা যাবে না। নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতেই এ সিদ্ধান্ত। কিন্তু দক্ষিণের কমিটি গঠনের সময় তার ব্যত্যয় ঘটে। জানা গেছে, মহানগরী আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ের কমিটি ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্প্রতি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্ধিত সভা ডাকার নির্দেশ দেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। তাঁর নির্দেশনা পেয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে এ বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। এতে কাউন্সিলরদের রাখা না রাখা নিয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে মহানগরীর নেতারাও পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই বিরোধ স্পষ্ট হচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্ধিত সভায় কাউন্সিলরদের রাখার পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘কাউন্সিলররা হলেন ভোটের মালিক। যারা যে কোনো সময় লোক জোগান দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ১৯৯৬ সালে যখন জনতার মঞ্চ হয় তখনো কাউন্সিলররা তার প্রমাণ রেখেছিলেন। কাউন্সিলরদের কাছে সব সময় লোকজন থাকে, যা ওয়ার্ড-থানা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে থাকে না। তাই আসন্ন বর্ধিত সভায় কাউন্সিলরদের রাখা হবে।’ কাউন্সিলরদের না রাখার পক্ষে নিজের মত তুলে ধরে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই বর্ধিত সভা করা হবে। আমরা মহানগরী আওয়ামী লীগের ৭৫ জন নেতা আছি। ২৪টি থানার ৪৮ জন, ৫৭টি ওয়ার্ডের ১১৪ জন। যে হোটেলে এ বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে সেখানে যদি জায়গা না হয় তাহলে কাউন্সিলরদের কীভাবে রাখব।’ ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগরী আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ, ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। পদ-পদবি ছাড়া যারা কাউন্সিলর হয়েছেন তাদের থাকার সুযোগ নেই। মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কর্মকান্ড আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।’

 

সর্বশেষ খবর