মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে তোতা হত্যায় নয়জনের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লায় খাসকামরায় হত্যায় একজনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রায় ১৮ বছর আগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জেরে নেছার আহমেদ তোতা নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার মামলায় ৯ আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। এই মামলায় প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়েছে। দন্ডিত আসামিরা হলেন- শাহীন, বাবুল, নাছির, নুরুল ইসলাম, জোবায়ের, দিদার, আবু বক্কর, ইসমাইল ও জঙ্গু। এদের মধ্যে শাহীন ছাড়া বাকি সবাই পলাতক। গতকাল চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা আক্তার এ রায় দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. জহিরুল ইসলাম।

মামলার নথির ভিত্তিতে আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরও জানান, ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর ফটিকছড়ি উপজেলার দক্ষিণ রাঙামাটিয়া গ্রামের নেছার আহমেদ ওরফে তোতাকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন তার স্ত্রী মোর্শেদা আক্তার বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। তিনি বলেন, দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করে পুলিশ মোট ১০ জনকে আসামি করে ২০০৪ সালের ১৪ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগ গঠনের পর রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে ১০ জনের সাক্ষ্য নেন। বিচার চলাকালে নাছির নামে এক আসামি মারা যান। পরবর্তীতে তাকে বিচার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ১০ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আদালত ৯ আসামির প্রত্যেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে।

কুমিল্লায় বিচারকের খাসকামরায় হত্যার ঘটনায় একজনের ফাঁসি : কুমিল্লায় বিচারকের খাসকামরায় ঢুকে এক আসামিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে ফাঁসির দন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ এ আদেশ দেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হাসান (২৩) কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভোজপাড়া গ্রামের শহিদুল্লাহর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সকালে কুমিল্লার তৃতীয় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের এজলাস কক্ষে একটি সাক্ষ্য গ্রহণ চলাকালে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হাসান ছুরি উঁচিয়ে ফারুককে (২৪) ধাওয়া করে। (ফারুক সম্পর্কে হাসানের মামাতো ভাই। দুজনই অপর একটি হত্যা মামলার হাজিরা দিতে আদালতে অবস্থান করছিল।) এ সময় আত্মরক্ষার্থে ফারুক এজলাসের মধ্য দিয়ে  দৌড়াতে থাকে। হাসানও তাকে ধাওয়া করে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বিচারকের খাসকামরায় ঢুকে পড়ে ফারুক। সেখানে ঢুকে হাসান তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও আদালতের লোকজন তাকে যতক্ষণে আটক করে, ততক্ষণে মারাত্মক জখম হয় ফারুক। ফারুককে আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর ১২টার সময় তার মৃত্যু হয়। ফারুক মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের ওহিদুল্লাহর ছেলে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানার এএসআই ফিরোজ আহমেদ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ওই বছরের ১৮ আগস্ট কুমিল্লা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ মন্ডল। এ হত্যাকান্ডের পর কুমিল্লাসহ দেশজুড়ে হইচইয়ের সৃষ্টি হয়। বিচারকের সামনে এক আসামিকে অপর আসামির কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আদালতের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

সর্বশেষ খবর