সোমবার, ২৯ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পের হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে চাই

-ফারুক হাসান

পোশাকশিল্পের হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে চাই

পোশাকশিল্পের হারানো ভাবমূর্তি উদ্ধার করতে চান বিজিএমইএ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল প্রধান ও সভাপতি পদপ্রার্থী এবং জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান। তিনি বলেছেন, আগামী দিনে এই শিল্পের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে বড় কাজ হবে। এর পাশাপাশি পোশাকশিল্পের বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ এবং উন্নত মানের পণ্য তৈরিতেও নজর দেব। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। ফারুক হাসান বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি। তারমতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ  উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইথ প্রাইড’ এই স্লোগান নিয়ে পৃথিবীর প্রায় ১৬০টির অধিক দেশে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকাকে সমুজ্জ্বল করেছে আমাদের পোশাক শিল্প। করোনার কারণে পোশাক শিল্প মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করে পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে, এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। সভাপতি পদপ্রার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমি সভাপতি নির্বাচিত হলে পোশাকশিল্পে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নিতে চাই। আবারও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করব, যাতে করে তারল্য সংকট মোকাবিলা করে কারখানাগুলোকে সচল রাখতে পারি। আমরা কেউ ভালো নেই। কভিডের কারণে সমগ্র পৃথিবীর অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত। অনিশ্চয়তা আন্তর্জাতিক বাজারকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। এই অবস্থায় অতীতের মতো আমাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সংকটকে সাফল্যে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি বাজার-ইউরোপ ও আমেরিকান মার্কেটে ক্রেতাদের ক্রয় আচরণ ও সামগ্রিক বাজারের ক্রয় ক্ষমতায় পরিবর্তন এসেছে। যার কারণে রপ্তানির পরিমাণ পরিবর্তিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণ করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। অতীতে আমাদের প্রাক্তন সভাপতিদের সঙ্গে কাজ করে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছি যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকার বাইরে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ওপরে রপ্তানি হচ্ছে। অতীতে আমার ওপর আস্থা রাখার কারণে কানাডা, আস্ট্রেলিয়া, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, চিলিসহ অনেকগুলো দেশে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, বিজিএমইএ পরিচালনায় অভিজ্ঞ, দক্ষ, প্রতিশ্রুতিশীল, কর্মতৎপর, উদ্যমী, নবীন, দ্বিতীয় প্রজন্মের মেধাবী তরুণদের সমন্বয়ে আমার প্যানেল সাজিয়েছি। আমার সঙ্গে প্যানেলে রয়েছে যে কোনো ক্রাইসিস মোকাবিলার পরীক্ষিত নেতৃত্ব, ব্যবসায় সফল, সাংগঠনিক দক্ষতার নবীন নেতৃত্ব। এ ছাড়াও আমাদের প্যানেলে রয়েছেন আমাদের সন্তানেরা যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে নিজ যোগ্যতায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রাক্কালে প্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদনের খরচ সাশ্রয়ের জন্যে কাজ করে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের সক্ষমতাকে ধরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। ফারুক হাসান আরও বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামীতে কভিড সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারের নীতি সহায়তার মাধ্যমে ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ইন্ডাস্ট্রি লিডারদের সঙ্গে নিয়ে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করব। সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নীতি সহায়তার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে টেকসই করার জন্য কাজ করব। ব্যবসা থেকে প্রস্থানের সহজ নীতিমালা, কাস্টমস ও ভ্যাট নীতিমালার সংস্কারসহ দেশের পোশাক খাত ও পোশাক মালিকদের ইমেজ বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করব। আগামী দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হলে অতীতের ন্যায় সংকটকে সম্ভাবনায় পরিণত করে সব সহকর্মীদের নিয়ে আমাদের সম্মিলিত মেধা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে শিল্পের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে নিজেদেরকে উৎসর্গ করব।

সর্বশেষ খবর