শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের হতে হবে দলনিরপেক্ষ

-মোফাজ্জল করিম

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের হতে হবে দলনিরপেক্ষ

সাবেক সচিব ও কূটনীতিক এ এইচ মোফাজ্জল করিম বলেছেন, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে দেখা যাচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হচ্ছেন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সে কারণে সাধারণ মানুষ যে কোনো ইস্যুতে প্রশাসনকে মনে করে একটি রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংগঠন। এমন ধারণা সৃষ্টি হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। রাষ্ট্র বা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অবশ্যই দলনিরপেক্ষ থাকতে হবে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রশাসনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মকান্ডের কারণে মানুষের মাঝে এই ধারণাটা সৃষ্টি হয়। এ থেকে উত্তরণ হতে হলে সরকারি কর্মচারীদের সর্বপ্রথম তার নিরপেক্ষতা, সততা, দক্ষতা ও দুর্নীতিমুক্ত অবস্থান জনগণের সামনে প্রমাণ করতে হবে। সরকারকেও মনে রাখতে হবে,  রাষ্ট্রের কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়। তারা কোনো দলের আদর্শের জন্য কাজ করবেন না। তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের সেইভাবে দেখতে হবে। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও সরকারের।

মোফাজ্জল করিম বলেন, মাঠ প্রশাসনে সেই আবহমান কাল ধরে সরকারের প্রতিনিধি জেলাতে জেলা প্রশাসক, উপজেলাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এরা তৃণমূলে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য অন্যান্য কর্মকর্তাও রয়েছেন। তারা সবাই মিলে একটি টিম। সেই টিমের নেতৃত্ব দেন প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে যিনি জেলা বা উপজেলার দায়িত্ব থাকেন। তার প্রথম আনুগত্য থাকতে হবে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি। একটা কথা মনে রাখতে হবে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে গিয়ে বা আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন না। কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারেন না। একইভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলীয় মনোভাব বা আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয় এমন লেখালেখি করতে পারেন না।

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশনা মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেন ঠিকই, কিন্তু তার মানে এই নয়, যে দল সরকারে থাকে, সেই দলের প্রতি কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কোনো দুর্বলতা বা একাত্মতা থাকতে পারে। এটা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিশেষ করে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দেওয়া অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব। সর্বাত্মকভাবে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা যাতে বিঘিœত না হয়, তারা যাতে অকুতোভয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য সরকার অবশ্যই তাদের সাহায্য সহযোগিতা করবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তাদের কর্মকান্ড রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হওয়া যাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর