এক বছরের বেশি সময় ধরে অদৃশ্য ব্যাধি করোনার সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে গোটা দুনিয়া। বিশ্ববাজারে ভ্যাকসিনের ৭৮০ মিলিয়নের বেশি ডোজ ছাড়া রয়েছে। তার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না মহামারীর দাপট। আর এ মহামারী যে এখনই নিয়ন্ত্রণে আসবে না, বিশ্বব্যাপী করোনাকে ঠেকাতে যে আরও কয়েক মাস লেগে যাবে সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জেনারেল টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বজুড়ে টানা সাত সপ্তাহ ধরে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আর টানা চার সপ্তাহ ধরে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু। তাই সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে একসঙ্গে বলেন, ‘আগামী আগস্টের মধ্যে আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। মারণব্যাধিকে রুখতে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জামের সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুত আমরা এ বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, করোনা মোকাবিলায় যেভাবে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। ২৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা যেভাবে করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। করোনার কারণে গত নয় মাসে ১ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চার মাসে ২ মিলিয়ন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গত তিন মাসে সে সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৩ মিলিয়নে। এ ছাড়া করোনার টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃতভাবে পিছিয়ে রয়েছে গরিব দেশের নাগরিকরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রতি চার জনের একজন করোনার টিকা নিয়েছেন। সেখানে গরিব দেশগুলোয় প্রতি ৫০০ জনের মধ্যে মাত্র একজন করোনার টিকা নিয়েছেন। এ ছাড়া করোনা নিয়ে অবহেলা, অসচেতনতা আরও বেশি করে বাড়িয়ে তুলছে এ রোগের প্রাদুর্ভাব। ফলে এখন সব বয়সী মানুষের শরীরে মিলছে করোনার জীবাণু। তাই করোনাকে প্রতিহত করতে শুধু একটি ভ্যাকসিনই যথেষ্ট নয়। মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা চালিয়ে যেতে হবে এখনো অনেক দিন। তাই সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। শুধু তাই নয়, বছর ঘুরলেও কমেনি করোনার দাপট। যার প্রমাণ গত সপ্তাহে সারা বিশ্বে ৫.২ মিলিয়ন সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে; যা অতীতের থেকে সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক বৃদ্ধি।