রবিবার, ২৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে

সীমান্তে করোনার তাণ্ডব, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাতজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে

করোনাভাইরাস নিয়ে আবারও আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঈদের ছুটিতে দুই দিন সংক্রমণ হার কমার পর টানা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুও। সেই সঙ্গে সীমান্ত দিয়ে ভারতফেরত অনেকের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হচ্ছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ভাইরাসটির পরিবর্তিত ধরনের তান্ডবে এখন বিপর্যস্ত ভারত। প্রতিদিন আড়াই লাখের মতো মানুষের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে দেশটিতে। মৃত্যু হচ্ছে চার হাজারের বেশি। লাশের শেষকৃত্য করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। অনেকে লাশ ভাসিয়ে দিচ্ছেন নদীতে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ২৩০টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ২৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা গত ৮ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এক দিনে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন, যা গত ১০ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এদিকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সীমান্ত দিয়ে ভারতফেরত অনেকের নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। মিলছে ভয়াবহ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। বাড়ছে সংক্রমণ হার। এতে সীমান্তের জেলাগুলোয় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সারা দেশের গড় সংক্রমণ হার ৯ শতাংশের নিচে থাকলেও গত বৃহস্পতিবার রাতে নমুনা পরীক্ষার সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলাফলে সীমান্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৬৭ শতাংশ নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া বুধবার ও বৃহস্পতিবার সোনামসজিদ চেকপোস্ট দিয়ে আসা ৩৫ জনসহ ৪২ জনের নমুনা ঢাকায় পাঠালে সাতজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল জানান, রাজশাহীর পিসিআর ল্যাব থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ১১৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে। এতে ৭৩ জনের দেহে এবং শুক্রবার ৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া নেত্রকোনায় গত বৃহস্পতিবার ভারত থেকে ফেরা দুজনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা সম্পর্কে ছেলের বৌ ও শ্বশুর। তারা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমিত কি না তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। লালমনিরহাটে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে এ পর্যন্ত ভারত থেকে আসা ২৪৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আছে কি না তা পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

দেশে গতকাল পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১২ হাজার ৩৪৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৮ জন। গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন ৭৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ২৫ জন ছিলেন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ১৩ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ২ জন চল্লিশোর্ধ্ব, ৩ জন ত্রিশোর্ধ্ব, ২ জন বিশোর্ধ্ব ও ২ জনের বয়স ছিল ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১৬ জন ঢাকা, ৭ জন চট্টগ্রাম, ৪ জন করে রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট, ২ জন রংপুর ও ১ জন বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন।

সর্বশেষ খবর