মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু

২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৮৭ রোগী হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক

উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ থামানোই যাচ্ছে না। রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো তৎপরতা দেখালেও কাজে আসছে না কিছুই। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশে নতুন করে আরও ২৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন; যা চলতি বছর এক দিনে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তিতে নতুন রেকর্ড। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত তার আগের ২৪ ঘণ্টার তথ্যের ভিত্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।

এদিকে নতুন ভর্তি রোগীর মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ২৭৯ আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে আটজন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৭৮। এর মধ্যে ঢাকার ৪১ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৯৪০ আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮ জন রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত মোট হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ১৮২। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ২০০ জন। আর ডেঙ্গু সন্দেহে চারটি মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনার জন্য আইইডিসিআরের ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু পর্যালোচনা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তবে এর প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি।

ডিএনসিসির জরিমানা : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসি এলাকায় এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিস্তার রোধকল্পে মোবাইল কোর্টে ২৭টি মামলায় সর্বমোট ৪ লাখ ৭৩ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। গতকাল ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে পাঁচ মামলায় ৫৫ হাজার ২০০, ২ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম সফিউল আজম পরিচালিত মোবাইল কোর্টে এক মামলায় ১ লাখ, ৩ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌফিকুর রহমান পরিচালিত মোবাইল কোর্টে পাঁচ মামলায় ৭০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালেহা বিনতে সিরাজ পরিচালিত মোবাইল কোর্টে এক মামলায় ২০ হাজার, ৫ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ হোসেন ও যতন মার্মা পরিচালিত মোবাইল কোর্টে ১১ মামলায় ১ লাখ ৭৮ হাজার, ৯ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান পরিচালিত মোবাইল কোর্টে এক মামলায় ১০ হাজার এবং ১০ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ শহিদুল ইসলাম পরিচালিত মোবাইল কোর্টে তিন মামলায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। মোট ২৭ মামলায় আদায়কৃত জরিমানার পরিমাণ ৪ লাখ ৭৩ হাজার ২০০ টাকা।

অভিযোগ পেলেই অভিযানের নির্দেশ তাপসের : গতকাল মশক নিধনে চালু করা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে হঠাৎ প্রবেশ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এ সময় তিনি অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। এর আগে সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ভবনে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণ বিতরণ করে নগর ভবনে ফেরেন তিনি। মেয়র মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত এবং উৎস নিধনের লক্ষ্যে দক্ষিণ সিটি প্রতিষ্ঠিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রবেশ করেন। সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে তিনি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর জানতে চান সকাল থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কতগুলো অভিযোগ এসেছে। কর্তব্যরত কর্মকর্তারা বলেন, ১২টি অভিযোগ পড়েছে। মেয়র সে তালিকা নিয়ে প্রথমে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আনোয়ার ইকবাল শান্টুকে ফোন করেন। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পাস্তা ক্লাব নামক স্থানে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন মেয়র। এরপর মেয়র অন্য অভিযোগগুলোর জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর