দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার ৩১ জুলাই থেকে টানা ১৩ দিন কমল। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ২২.৪৬ শতাংশ, যা আগের দিনের চেয়ে ০.৯৯ শতাংশ কম ও ৪৬ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। শনাক্তের হার কমলেও চলতি আগস্টে সর্বাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে মৃত্যু। এ সময় করোনায় মারা গেছেন ২১৫ জন, যা ১৩ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ হাজার ১২৬ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২২.৪৬ শতাংশ। এর চেয়ে কম ২১.৫৯ শতাংশ শনাক্তের হার ছিল ২৭ জুন। এরপর সংক্রমণ বাড়তে থাকে। ৩১ জুলাই আবার কমতে শুরু করে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২১৫ জন। এর চেয়ে কম ২১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল ৩০ জুলাই। তবে ২৫ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রতিদিনই ২ শতাধিক মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৮ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৩ হাজার ৬২৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের মধ্যে ১০৭ জন পুরুষ, ১০৮ জন নারী। অনেকদিন পর দৈনিক মৃত্যুতে পুরুষকে ছাড়িয়ে গেল নারী। গতকাল পর্যন্ত মোট মৃতের ৬৬.১৭ ভাগই ছিলেন পুরুষ। গত এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ ছাড়া ৫৪ জন চট্টগ্রাম, ২৮ জন খুলনা, ২২ জন সিলেট, ১৬ জন রংপুর, ১২ জন বরিশাল, ১০ জন ময়মনসিংহ ও আটজন রাজশাহী বিভাগে মারা গেছেন। হাসপাতালে ২১২ আর বাড়িতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বয়স বিবেচনায় ১০৯ জনই ষাটোর্ধ্ব, ৫৬ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ১৯ জন চল্লিশোর্ধ্ব, ১৯ জন ত্রিশোর্ধ্ব, নয়জন বিশোর্ধ্ব, একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ও দুজনের বয়স ছিল ১১ বছরের কম।
নমুনা পরীক্ষায় সারা দেশের গড় শনাক্তের হার ১৩ দিন ধরে কমলেও গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ময়মনসিংহ, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে। এ সময় শনাক্তের হার ছিল যথাক্রমে সিলেটে ৩০.৪৩, ময়মনসিংহে ২৯.৩৪, বরিশালে ২৪.৮৮, চট্টগ্রামে ২৩, ঢাকায় ২২.৪৩, রংপুরে ২১.১৩, খুলনায় ২০.৫৩ ও রাজশাহীতে ১৪.৭৫ শতাংশ। আগের দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগে শনাক্তের হার ১.৭৫ শতাংশ বাড়লেও দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন শনাক্তের হার ছিল এ বিভাগেই।
হাসপাতালগুলো আর রোগী সংকুলান করতে পারছে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, হাসপাতালগুলো আর রোগী সংকুলান করতে পারছে না। তবে সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে পরিস্থিতির উত্তরণে। সংক্রমণ কমে আসছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকার বয়স্কদের টিকার আওতায় আনতে সব ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে করোনা ও ডেঙ্গু মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সোসাইটি অব মেডিসিন এবং সিডিডি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি মাসে দেশে আরও ১ কোটি ডোজ করোনার টিকা আসছে। এখন পর্যন্ত দেশের প্রায় পৌনে ২ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এবং ৫০ লাখের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।