বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রেকি করে স্ত্রী চুরি করে স্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বিভিন্ন অফিসে স্ত্রী মুক্তা আক্তার রেকি (আগে খোঁজ-খবর নেওয়া) করে, এরপর তার স্বামী শফিক ভূঁইয়া ওরফে বাছা ওই অফিসে চুরি করত। ওই চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার রাজধানীর ডেমরা ও কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মো. জামাল উদ্দিন, শফিক ভূঁইয়া ওরফে বাছা, তার স্ত্রী মুক্তা আক্তার, জসিম উদ্দীন, কাদের কিবরিয়া ওরফে বাবু, মো. শাকিল ও আলামিন। তাদের কাছ থেকে হাতুড়ি, লোহার রেঞ্জ, ব্লেড, প্লায়ার্স, স্ক্রু ড্রাইভার, ২০টি সিম কার্ডসহ চুরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, গত ১১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার প্যারাডাইস টাওয়ারের অষ্টম তলায় গোল্ডেন টাচ ইম্পোর্টস আইএনসি অফিসে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবির উত্তরা বিভাগ। পরে সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চুরির সঙ্গে জড়িত ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রটি চট্টগ্রামের বন্দরে বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করত। সেখানেই এই চক্রের সবার চুরির হাতেখড়ি। কয়েক বছর আগে তারা ঢাকায় এসে আস্তানা গড়ে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সুউচ্চ টাওয়ারে অবস্থিত বিভিন্ন নামিদামি অফিসে চুরি করার জন্য টার্গেট করে। এই চোর চক্রের সদস্যরা প্রথমে টার্গেটকৃত অফিসকে ২-৩ দিনব্যাপী রেকি করার মাধ্যমে চুরির কৌশল রপ্ত করে। মুক্তা বিভিন্ন অফিস ও ভবনের নিরাপত্তা রেকি করত। কিন্তু চুরির সময় সে অংশগ্রহণ করত না। তবে চুরি করা জিনিসপত্র মুক্তার কাছে রাখা হত। সাধারণত এই চক্রটি টাকা চুরি করত। যেসব ভবনে চক্রের পুরুষ সদস্যরা যেতে পারে না সেখানে মুক্তাকে রেকি করতে পাঠানো হত। তারপর তার দেওয়া তথ্যের ওপর চুরির পরিকল্পনা করে চক্রটি। অফিসের তালা, সিকিউরিটি লক, ডিজিটাল লক ও অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙে মূল্যবান মালামাল ও টাকা-পয়সা চুরি করে কৌশলে বের হয়ে চলে যায় তারা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জামালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ১০টি এবং ঢাকায় ৪টি মামলা রয়েছে। এছাড়া চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃতরা আদাবর টাওয়ারের ৪র্থ তলার এক্সপার্ট গ্রুপে, কাকরাইল নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১০ তলায় আমিন গ্রুপে, গুলশান জব্বার টাওয়ারের ১৯ তলায় এসিউর গ্রুপে, বাড্ডা রূপায়ন টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলায় অবস্থিত সফটলিংক কোম্পানিতে ও ৭ম তলায় অবস্থিত এক্সজিবল কোম্পানির অফিসে চুরি করার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। এসব চুরি ক্লুলেস ছিল। ঘটনাস্থলগুলোর সংগৃহীত সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চুরির টাকায় চক্রের সদস্য জামাল তার বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার বিজয়কড়া গ্রামে দালান দিয়েছেন। অন্য সদস্য জসিমও তার বাড়ি রাজধানীর ডেমরা থানার ডগাইর পূর্বপাড়া নান্টু রোডের আল আকসা মসজিদের সামনে দালান দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর