রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা

মৃত্যুফাঁদ সড়ক

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

মৃত্যুফাঁদ সড়ক

প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রশস্ততা বাড়ানো হলেও মৃত্যুঝুঁকি কমেনি। সর্বশেষ গত ২৪ সেপ্টেম্বর বালুভর্তি ট্রাকের ধাক্কায় যাত্রীসহ মাহেন্দ্র সড়কের পাশে ডোবায় তলিয়ে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া একই সড়কে গত এক মাসে প্রায় ৩৫টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, একই সড়কে পাশাপাশি কম গতি ও দ্রুত গতির যান চলাচল, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, মহাসড়কে সংযুক্ত চার শতাধিক লিংক রোড ও চালকের অসচেতনতায় এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

খুলনার খর্নিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান জানান, সড়কে প্রশস্ততা কম থাকায় তুলনামূলক কম গতির যানবাহনকে দ্রুতগতির যানবাহন ওভারটেক করতে গেলেই দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে ঝিলের ডাঙ্গায় বালুভর্তি ট্রাক যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রকে ওভারটেক করার সময় ধাক্কা লাগলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাহেন্দ্রসহ ট্রাকটি পাশের খাদে পানিতে পড়ে যায়। এতে চারজনের মৃত্যু হয়। সড়কে ডিভাইডার দিয়ে কম গতির যানবাহন চলাচলে আলাদা পথ তৈরি করা গেলে দুর্ঘটনা কমবে। জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ২৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা সড়ক ২০ ফুট থেকে ৩৫ ফুট চওড়া করা হয়েছে। কিন্তু সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর থেকে এ রুটে যানচলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কটি ৮০ ফুটে উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সড়কে গুটুদিয়া মোড়, কাঁঠালতলা ও বালিয়াখালী ব্রিজ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক থাকায় দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছে না। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা), খুলনার নগর সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব জানান, প্রতিদিন অসংখ্য বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, নছিমন, মাহেন্দ্রসহ বিভিন্ন গতির যানবাহন এ সড়কে চলাচল করে। রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অসংখ্য বাঁক। এসব বাঁকের এক পাশ থেকে অন্য পাশের রাস্তা দেখা যায় না। এ ছাড়া সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত চার শতাধিক লিংক রোড বা সাইড রোড রয়েছে। এসব রোড দিয়ে ছোট-বড় যানবাহন হঠাৎ মহাসড়কে এলে গতি নিয়ন্ত্রণের অভাবে দুর্ঘটনা ঘটে। খুলনার সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাঁক মেরামতে প্রকল্প গ্রহণ, গতি নিরোধক তৈরি ও সতর্কীকরণ সাইন বোর্ড টানানোর কথা জানিয়েছে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, স্থানীয় কিছু সমস্যার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে জমি অধিগ্রহণ করা যায়নি। এসব বাঁক সোজা করতে ৩০ কোটি টাকার একটা প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সড়কটিকে ন্যাশনাল হাইওয়ে ঘোষণা করা হলে ফোর লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর