সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সব বর্ষের জন্য খুলল ঢাবির হল

আগের অবস্থাতেই ফিরছে ‘গণরুম’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ৮টা থেকে হলে উঠতে শুরু করেন এসব বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। ফুল, চকলেট ও মাস্ক দিয়ে তাদের স্বাগত জানান সংশ্লিষ্ট হলের আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। তবে আশানুরূপ ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি হলগুলোর সামনে।

এর আগে গত ৫ অক্টোবর অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় সব বর্ষের শিক্ষার্থীর জন্য ১০ অক্টোবর থেকে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষিত তারিখের আগেই বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী, এমনকি মাস্টার্সের ফলাফল ঘোষিত হওয়া অছাত্ররাও হলে ওঠে যান। জানা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ ইতিমধ্যে হলে ওঠায় হলগুলোতে প্রবেশে তেমন একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। এ ছাড়াও আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা আসায় গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীরা আগেভাগে হলে আসতে আগ্রহ বোধ করছেন না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ইতিমধ্যে হলে উঠে গেছেন। এমনকি তাদের অনেকে এ মাসের শুরু থেকেই হলে অবস্থান করছেন। সকালে বিজয় একাত্তরে হলে প্রবেশ করতে চাইলে প্রথম বর্ষের অনাবাসিক বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে বাধা দেয় হল প্রশাসন। তবে ছাত্রলীগের সহযোগিতায় পরে তারা হলে উঠে যায়। এ বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির জানান, কিছু শিক্ষার্থী দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসছে, ওরা গণরুমের শিক্ষার্থী। আপাতত তালিকা করে ওদের থাকতে দিয়েছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে (বরাদ্দ দিয়ে) ওদের মূল সিটে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘গণরুম থাকবে না’ বলা হলেও ছেলেদের অধিকাংশ হলেই গণরুম আগের অবস্থাতে ফিরতে শুরু করেছে। গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণরুমগুলোও পূর্ণ হয়ে যাবে। একইভাবে, ‘হলগুলোতে কোনোভাবেই অছাত্র ও বহিরাগতদের থাকতে দেওয়া হবে না’- এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন অনেকটা ‘গা বাঁচিয়ে চলার নীতি’ অনুসরণ করছে। এক্ষেত্রে মেয়েদের হলে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ছেলেদের হলে তা নেই। বেশ কয়েকটি হলে অছাত্ররা উঠলেও তাদের নামিয়ে দিতে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না প্রশাসন। উল্লেখ্য, অছাত্রদের মধ্যে একটি বড় অংশ ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আরেকটি অংশ অবৈধভাবে হলে অবস্থান করে চাকরির প্রস্তুতি নেন। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি হলের গেটে স্থাপিত হাত ধোয়ার বেসিন ও ক্যান্টিন ঘুরে দেখেন এবং হলে ওঠা কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ‘শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন নিয়ে হলে ওঠা’য় সন্তোষ প্রকাশ করেন উপাচার্য। এ সময় অছাত্রদের হলে ওঠা ও গণরুমের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের তথ্যগুলো হল প্রশাসনের কাজে লাগবে। যাদের ছাত্রত্ব  শেষ, তারা নতুন শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দেবে। এক্ষেত্রে ‘ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো’সহ সবাই সহযোগিতা করলে আমরা সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।

সর্বশেষ খবর