রবিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

দাদির জিম্মায় গেল সেই তিন বোন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আদাবর থেকে নিখোঁজ হওয়া সেই তিন বোনকে দাদির জিম্মায় দিয়েছে আদালত। যশোর থেকে উদ্ধারের পর গতকাল তাদের আদালতে হাজির করে আদাবর থানা পুলিশ। এ সময় তাদের জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন দাদি। এরপর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী শুনানি শেষে তিন বোনকে দাদির জিম্মায় দেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আদাবর এলাকার খালার বাসা থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে বেরিয়ে যায় তিন বোন। তাদের একজন উচ্চমাধ্যমিকে পড়ে। অন্য দুজন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এ ঘটনায় আদাবর থানায় জিডি করেন তাদের বড় খালা। এরপর পুলিশ তাদের বাবার বাসা যশোর থেকে উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে আসে। ওই তিন বোন পুলিশকে জানায়, দুই খালার কাছে তারা যেমন ব্যবহার আশা করেছিল, তা পায়নি। তাই অসুস্থ বাবার কাছে চলে গিয়েছিল। খালাদের কাছে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় তারা এ কাজ করে। গতকাল রাজধানীর শ্যামলীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। তিনি বলেন, খালাদের কাছ থেকে তারা যতটুকু প্রত্যাশা করেছিল, সেটা না পাওয়ায় এবং বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না দেওয়ার ক্ষোভ থেকেই তিন বোন একসঙ্গে কাউকে না বলে বেরিয়ে যায়। মায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বাবার সঙ্গছাড়া ছিল তিন বোন। মায়ের মৃত্যুর পর খালাদের কর্মকাে  সন্তুষ্ট ছিল না তারা। তাই তারা চলে গিয়েছিল যশোরে বাবার কাছে। ২০১৩ সালে তাদের মা মারা গেলে বাবা আরেকটি বিয়ে করে যশোরে থাকেন। তখন থেকে খালাদের কাছেই থাকছিল তিন বোন। আদাবরের শেখেরটেকের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হলে আদাবর থানায় জিডি করেন তাদের খালা। পরে পুলিশ তাদের হদিস পায় যশোরে। সেখানে তাদের বাবা থাকেন। মেয়ে তিনটির দাদির মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তাদের খোঁজ মেলে। ২০১২ সালে ওই তিন বোনের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলে তারা মায়ের সঙ্গে থাকা শুরু করে। মা ২০১৩ সালে ক্যান্সারে মারা যান। এরপর এক খালার কাছে দুই বোন, আরেক খালার কাছে এক বোন থাকত। একজন খালার সঙ্গে ঢাকার খিলগাঁওতে থাকত। দুই বোনের এসএসসি পরীক্ষার জন্য সে শেখেরটেকে এলে তিন বোন একত্রে বাড়ি ছাড়ার পরিকল্পনা করে। তিন বোনের সঙ্গে তাদের দাদির যোগাযোগ ছিল। দাদি তাদের ২ হাজার টাকা পাঠায়। সেই টাকায় তারা যশোর চলে যায়। রবিবার দুই বোনের এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে। তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। গতকাল তাদের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের তিন বোনের বক্তব্য শোনে। পরে আদালত তাদের তিন বোনকে দাদির জিম্মায় দিয়ে দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর