বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

যানজট ভোগান্তি জয়দেবপুর থেকে বনানী

ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় সড়কেই, কবে স্বস্তি মিলবে কেউ জানে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

যানজট ভোগান্তি জয়দেবপুর থেকে বনানী

গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে ঢাকার বনানী- সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে অতিষ্ঠ এ রোড দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায়ই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে। সময়মতো অফিস বা কাক্সিক্ষত কাজে পৌঁছাতে পারছেন না। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ, রোগীসহ জনসাধারণকে। একদিকে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের নির্মাণ কাজের খোঁড়াখুঁড়ি, অন্যদিকে মহাসড়কের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট। ফলে যানজট থেকে যেন মুক্তিই মিলছে না। ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ট্রাফিক পুলিশ-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জয়দেবপুর থেকে বনানী রোডে বিআরটি মেগা প্রকল্প নির্মাণের ফলে রাস্তা সরু হয়ে যাওয়া, রাস্তা ভাঙা, বড় বড় গর্ত ও টানা বৃষ্টিতে যানজট লেগেই থাকছে। আমরা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’

গতকাল দুপুরে ঢাকার আজমপুর ফুটওভার ব্রিজ থেকে দেখা যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট। গাড়ির চাকা যেন ঘুরতেই চায় না। যানজটের কারণে গাড়িগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকছে। বিরক্ত হয়ে যাত্রীদের কেউ কেউ হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন, কেউ বা অসহায়ের মতো বসে আছেন। কেউ বা বাস পাল্টিয়ে এ বাস থেকে ও বাসে উঠছেন। যানজট যেন তাদের কাছে অসহ্য যন্ত্রণা হয়ে ধরা দিয়েছে। ঢাকায় টানা কয়েকদিন বৃষ্টির পাশাপাশি সড়কে চলছে সংস্কারকাজ। সেই সঙ্গে রয়েছে অব্যবস্থাপনা। এ কারণে গতকালও সড়কে ব্যাপক যানজট ছিল। ভোর থেকে সড়কের গাজীপুরের বোর্ডবাজার থেকে ঢাকার বনানী পর্যন্ত যানজট লেগেই ছিল। ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বলছেন, বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় করতে হয়েছে বড় বড় গর্ত, কোথাও কোথাও ভেঙে গেছে। এর মধ্যে রবি ও সোমবার টানা বৃষ্টি। এ কারণে সড়কের গর্তগুলোয় পানি জমেছে, সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এর বাইরে মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকায় সড়কের একটি অংশ কাটা হয়েছে। এতে সড়কে গাড়ি চলাচলের পথ সংকুচিত হয়েছে। ঢাকার রামপুরা থেকে গাজীপুরের স্টেশন রোডের উদ্দেশে বাসযোগে রওনা দিয়েছিলেন মমতাজ উদ্দিন। বেলা ১১টার দিকে তাকে পাওয়া যায় উত্তরার আজমপুরে। তখন বাসে অল্প কয়েকজন যাত্রী। মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হয়েছি। চার ঘণ্টা পর এলাম এ জায়গায়। বাকি রাস্তা কতক্ষণে যেতে পারব জানি না। আমরা কজন ছাড়া সবাই বিরক্ত হয়ে বাস থেকে নেমে গেছেন।’ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের ডিসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দিন টানা বৃষ্টি, বিআরটি প্রকল্পের কাজ, রাস্তা সরু হয়ে যাওয়া, খানাখন্দ বা গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমা ও রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ার ফলে যানজট বেড়েছিল। এসব কারণে গাড়ি ধীরগতিতে চলাচল করেছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত যানজটের এ ধারা অব্যাহত ছিল। রোদ ওঠায় এবং বিআরটি প্রকল্পের পক্ষ থেকে রাস্তার কিছু কাজ করে দেওয়ায় গাড়ির গতি বেড়েছে। যানজট কমে আসছে। আমরা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছি।’ সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী চেরাগ আলী এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণ খোঁড়াখুঁড়ি অন্যদিকে মহাসড়কের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট। এ ছাড়া বৃষ্টির কারণে মহাসড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং নেই ডিভাইডার। ফলে গাড়ি বিশৃঙ্খলভাবে চলাচলের কারণে যানজট লেগেই থাকছে। এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক) দক্ষিণের মো. ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণ খোঁড়াখুঁড়ি, গত দুই দিনে বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। পাঁচ-ছয় লাইনে গাড়ি চলাচলের পরিবর্তে দেড়-দুই লাইনে চলছে।’

সর্বশেষ খবর