বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

মজুরি ৩০০ টাকা না হলে আন্দোলন চলবে চা শ্রমিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও সিলেট

মজুরি ৩০০ টাকা না হলে আন্দোলন চলবে চা শ্রমিকদের

দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা দিয়ে আমাদের সংসার আর চলছে না। তাই ৩০০ টাকা দাবি করেছি। এটা না মানলে আন্দোলন চলবে।

রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদফতরে গতকাল সরকার, চা শ্রমিক ও চা বাগান মালিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু গোয়ালা।

তিনি বলেন, সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। সব কিছুর দাম বাড়লেও আমাদের মজুরি বাড়ছে না। দুই-আড়াই ঘণ্টা বৈঠক হলেও এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষ মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো প্রস্তাব দেননি। সরকারও এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হয় না। আমরা তাহলে কোথায় যাব। আমরা তো আন্দোলনে যেতে চাই না। কিন্তু আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এর আগে শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও অতিরিক্ত সচিব খালেদ মামুন চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকার, চা বাগান মালিক ও শ্রমিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাত ৮টার দিকে শেষ হয়। এরপর মহাপরিচালকের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করেন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই আলোচনা চলছিল।

এদিকে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীতকরণের দাবিতে সিলেটে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন চা শ্রমিকরা। গতকালও কাজে যোগ না দিয়ে চা শ্রমিকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল আন্দোলনের পঞ্চম দিনে শ্রমিকরা প্রতিটি চা বাগানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন বলে জানান শ্রমিক নেতারা। গত শনিবার থেকে এ অনির্দিষ্টকালের শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়।

ধর্মঘটে বাগানের কাঁচা চা পাতা নষ্ট হওয়ায় গত মঙ্গলবার রাতে শ্রীমঙ্গল থানায় জিডি করেছেন চারটি চা কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক। একেকটি চা কারখানায় অধীনে রয়েছে চার-পাঁচটি চা বাগান।

জিডিতে বলা হয়, ধর্মঘটে রাজঘাট চা কারখানায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩৫ কেজি, ডিনস্টন চা কারখানায় ৯৯ হাজার ২৫০ কেজি, বালিশিরায় ৫৩ হাজার ২০৭ কেজি ও আমরাইলে ৫ হাজার ৬৮৩ কেজি কাঁচা চা পাতা নষ্ট হয়ে গেছে। সকালে উপজেলার কয়েকটি চা বাগান পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অনুুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ। এ সময় তিনি আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের দাবি-দাওয়া শোনেন।

ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক দিলিপ কাহার বলেন, ১২০ টাকা মজুরিতে ভালোভাবে খেতে পারি না। খুব কষ্টে আছি।

ফুল্কি হাজরা বলেন, আমরা মাংস-ভাত চাই না, অন্তত দুই বেলা ডাল-ভাত খাওয়ার জন্য ৩০০ টাকা দাবি করেছি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, বাগানের কাঁচা চা পাতা নষ্ট হওয়ার জন্য বাগান মালিকরাই দায়ী।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, সরকার যখন আমাদের ডেকেছে তখনই আমরা বৈঠকে বসছি।

অনুুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ এমপি বলেন, দুই পক্ষের সমঝোতা না হয়ে বাগান বন্ধ থাকলে দেশের ক্ষতি হবে।

জিডি প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন করিব বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে জিডি তদন্ত করব।

 

সর্বশেষ খবর