বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বগুড়ায় মৌমাছির খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় মৌমাছির খামার

শীতকে সামনে রেখে মৌমাছি খামারিরা প্রস্তুতি শুরু করেছে। বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছির খামার গড়ে শীত মৌসুমের তিন মাসে ৩০ লাখ টাকার মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে খামারি মজিবুল হক। এখন মৌমাছিদের চিনি খাইয়ে বংশ বৃদ্ধি করে নিচ্ছেন। শীতে সরিষা ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মধু সংগ্রহ শুরু করবে মৌচাষি। জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ উপজেলার মরাগাঙ গ্রামের মজিবুল হক বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ী ইউপির আমতলী গ্রামে একটি জমি ভাড়া নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মৌমাছি চাষ করছেন। ২০০৫ সালে মজিবুল মৌমাছির খামারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। মধুর খোঁজে মজিবুল দেশের বিভিন্ন জেলায় তার মৌমাছির খামার নিয়ে ঘুরে বেড়ান। মধু বিক্রি করেই তার সংসার চলে। দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিকভাবে মৌ খামার গড়ে লাভবান হয়েছেন। মজিবুল ১৬০টি বাক্সের মধ্যে মৌমাছির খামার গড়েছেন। প্রতিটি বাক্সে নয়টি করে মৌচাক রয়েছে। মৌমাছি রয়েছে আনুমানিক ২০ হাজার করে। মৌমাছির খাবার হিসেবে এখন মৌমাছিকে তিনি চিনি খাওয়াচ্ছেন। আর কৃত্রিম প্রজনন ব্যবহার করে মৌমাছির সংখ্যা বৃদ্ধি করছেন। মৌমাছির সংখ্যা যত বাড়বে মধু সংগ্রহের পরিমাণ তত বাড়বে।

সে কারণে তিনি মৌমাছির সংখ্যা বাড়িয়ে নিচ্ছে।  মৌচাষি মজিবুল জানান, এখন মৌমাছির অফ সিজন। মৌমাছির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মোটামুটি প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরিষার মৌসুম শুরু হলে তার খামারে মধু সংগ্রহ শুরু হবে।

সেই সময়ে তিনি প্রতি বাক্স থেকে প্রতিমাসে প্রায় ১ মণ মধু সংগ্রহ করবে। তার ১৬০টি বাক্স থেকে প্রতিমাসে ১৬০ মণ করে মধু পাবেন। প্রতি মণ মধু তিনি ৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। সে হিসেবে তিনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মধু বিক্রয় করবেন। সারা বছরের খামার ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে তিনি বেশ ভালো লাভবান হতে পারবেন। গত বছর মজিবুল সিজন টাইমে প্রতিমাসে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার মধু বিক্রি করেছিলেন। তিনি জানান, আসছে সিজনে প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকার মধু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। শীতের তিনমাসে তিনি প্রায় ৩০ লাখ টাকার মধু বিক্রি করবেন। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। এ ব্যবসায় অনেকেই সাবলম্বী হয়েছেন। আমিও এ ব্যবসা করেই মোটামুটি স্বচ্ছলভাবেই চলি। তবে চিনির দাম বৃদ্ধিতে এখন ইনভেস্টের পরিমাণ খুবই বেশি। সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউপির পারতিত পরল গ্রামের ইউনুছ আলীর পুত্র মো. ফ্রিডম জানান, মৌমাছির খামার শুনে দেখতে এসেছি। কিভাবে নতুন খামার করা যায়, সে বিষয়ে খামারি ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শমূলক অনেক কথা বলেছি। নতুন একটি খামার করার জন্য পরিকল্পনা করছি। সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম জানান এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। মৌমাছির মাধ্যমে ফুলের পরাগায়ন ভালো হবে, ফলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে সরিষার উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। অপরদিকে বাড়তি আয় হিসেবে মধুও পাওয়া যাবে। মৌমাছির খামারটি আমরা পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে আমরা তাদের কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া অব্যাহত রেখেছি। সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, মৌমাছির খামারিদের প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর