বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজধানীতে নবান্ন উৎসব

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

রাজধানীতে নবান্ন উৎসব

হেমন্তের কাশফুলে মোড়ানো সকাল। হালকা শীত জেঁকে বসেছে আবহমান বাংলার প্রকৃতিতে। নতুন ফসলের আগমনে কিষানির ঘরেও আনন্দ বইছে। নতুন ধানের মন্ডম গন্ধে মুখরিত রূপসী বাংলার সাজানো গোছানো মেঠোপথ কিষানির বাড়ির উঠান। সোনালি ধানের শীষে ফসলের মাঠজুড়ে অবারিত সৌন্দর্য। নতুন বিন্নিধানের খই, পিঠাপুলি-পায়েস বানাতে ব্যস্ত বাড়ির গিন্নিরা। তবে ইট-কাঠের যান্ত্রিক নগরীতে নবান্নের এ উচ্ছ্বাস আর আনন্দ যেন রূপকথার গল্পের কোনো অজানা অধ্যায়। আবহমান বাংলার সংস্কৃতি নবান্ন। রূপসী বাংলার চিরায়ত এ ঐতিহ্য নগরের বাসিন্দাদের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজধানীতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছেন সংস্কৃতিজনেরা।

গতকাল শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে জাতীয় নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ। এটি নিয়মিত আয়োজনের ২৪তম আসর। বাঁশির মূর্ছনায় সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। দুই পর্বে বিভক্ত এ আয়োজনের সকালের পর্বে গান, কবিতা ও নৃত্যের ছন্দে উৎসব প্রাঙ্গণে ভিড় করেছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। সকালের পর্বে একক সংগীত পরিবেশন করেন সালমা আকবর, মহাদেব ঘোষ, আবু বকর সিদ্দিক, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, অণিমা মুক্তি গোমেজ। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন রূপা চক্রবর্তী, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, আহকামউল্লাহ। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন নৃত্যম, দিব্য, কথক নৃত্য সম্প্রদায়, স্পন্দন, নৃত্যজন, সৃষ্টিশীল একাডেমি ও শিশু সংগঠন শিল্পবৃত্ত। কথন পর্বে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শাহিদুর রাশিদ ভূঁইয়া, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের সহসভাপতি কাজী মদিনা। জাতীয় নবান্নোৎব উদ্যাপন পর্ষদের সভাপতি লায়লা হাসান যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় তাঁর লিখিত বার্তা পাঠ করেন পর্ষদের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। বিকালের পর্বে ছিল শিশু শিল্পীদের দলীয় আবৃত্তি, নাচ ও গান। আরও অংশ নেয় ঢাকার মন্দির সাংস্কৃতিক পাঠশালা, দনিয়া সবুজ কুঁড়ি কচিকাঁচার মেলা, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, তারার মেলা সংগীত একাডেমি, স্বপ্নবিকাশ কলাকেন্দ্র ও নৃত্যমঞ্চ। এ পর্বে একক সংগীত পরিবেশন করেন শান্তা সরকার, দেলোয়ার বাউল, সমর বড়ুয়া, সুরাইয়া পারভীন, মাহজাবিন রহমান শাওলী, আবিদা রহমান সেতু, রাকিব খান লুবা, মোহাম্মদ মারুফ হোসেন, আতাউর রহমান, শ্রাবণী গুহরায়, ফারজানা ইভা, অবিনাশ বাউ, সঞ্জয় কবিরাজ, ফেরদৌসী কাকলি, বিশ্বজিৎ রায়, মনিরা ইসলাম গুরুপ্রিয়া, নবনীতা জায়ীদ চৌধুরী, মেহেদী ফরিদ, তামান্না নিগার তুলি। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি, পঞ্চায়েত, সমস্বর, বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, বাফা, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, দৃষ্টি, সুরনন্দন নজরুল চর্চা কেন্দ্র ও ভিন্নধারা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন নিপু, ফয়জুল আলম পাপ্পু, বেলায়েত হোসেন, নায়লা তারান্নুম কাকলি, লাবণী পুতুল, আজিজুল বাসার মাসুম, আহসান উল্লাহ তমাল, তামান্না সারোয়ার নিপা, তামান্না তিথি ও ফয়সল আহমদ। দলীয় নৃত্য পরিবেশনায় ছিল ধৃতি নর্তনালয়, ভাবনা, পরম্পরা নৃত্যালয়, কালারস্ অব হিলস, নূপুরের ছন্দ, সিনথিয়া ডান্স একাডেমি ও সুরনন্দন বিদ্যাপীঠ। বাহারি রকমের পিঠা, খই, মুড়কি, মোয়ার স্টল দিয়ে সাজানো ছিল উৎসব প্রাঙ্গণ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর