কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনায় জমির প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে এক পিতা তার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর পুলিশ মেয়েটির পিতা, মাতা ও চাচিকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের তিনজন আসামিকে আদালতে সেপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. জাহিদুল ইসলাম তার প্রতিবেশী মজিবর গংদের সঙ্গে ৩২ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে গত ১০ মে শনিবার গভীর রাতে নিজের মেয়ে জান্নাতি খাতুনকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার পিতা জাহিদুল ইসলাম। এই হত্যাকান্ডে তাকে সহায়তা করেন তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম এবং ভাইয়ের স্ত্রী শাহিনুর বেগম। পুলিশের দেয়া তথ্যে, ওইদিন রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে রড ও দা দিয়ে কুপিয়ে জান্নাতিকে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ বাড়ির সামনের ভুট্টা খেতে ফেলে রাখে এবং পাশাপাশি বাড়ির খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে। এরপর নিহতের চাচা খলিল হক সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পরদিন থেকে পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. বজলার রহমান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মামলার তদন্তকারী অফিসার সদর থানার ওসি ও ডিবি পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিকভাবে অনুসন্ধান চালায় এ হত্যাকান্ডে। এরপরই উক্ত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনসহ মূল ঘাতক ওই মেয়েটির পিতা মো. জাহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও সহযোগী ভিকটিমের মা মোছা. মোর্শেদা বেগম (৩৮) ও ভিকটিমের চাচী মোছা. শাহিনুর বেগমকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর জাহিদুলের দেয়া তথ্যমতে তাদের বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড় থেকে মেয়েকে হত্যায় ব্যবহৃত রড ও দা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি হাবিবুল্ল্যাহ আজ সকালে জানান, আসামিদের জবানবন্দি নিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এ মামলার তদন্ত কাজ অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ