চট্টগ্রামে ঘটছে একের পর এক খুনের ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জন পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় খুন হয়েছেন ৮০ জন। একইভাবে নগরীর ১৬ থানায় খুন হয়েছেন ৩৮ জন। জুলাইয়ের ১৫ দিনে খুন হয়েছেন আরও ১০ জন। সবমিলিয়ে চলতি বছর জেলা এবং নগরীতে খুন হয়েছেন কমপক্ষে ১৩০ জন। চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলো পর্যালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধান আটটি কারণকে কেন্দ্র করেই চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। এর মধ্যে খুনের নেপথ্য কারণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-রাজনৈতিক বিরোধ, আধিপত্য বিস্তার, পারিবারিক কলহ, সামাজিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বিরোধ, মাদক কারবার, ভূমি বিরোধ এবং পূর্বশত্রুতা। রাজনৈতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল। অর্থনৈতিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, চাঁদাবাজি এবং মাদক কারবার সংক্রান্ত। এ ছাড়াও ব্যক্তিগত রেষারেষি, ভুল বোঝাবুঝি এবং অন্যান্য সামাজিক ও ব্যক্তিগত কারণেও খুনের ঘটনা ঘটছে। খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী যেমন রয়েছেন, একইভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ নানান অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তরাও রয়েছেন খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায়। একইভাবে বাবা, ভাই, বোন কিংবা স্ত্রীরাও খুনের শিকার হয়েছেন আপনজনের হাতে। যদিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দাবি, এরই মধ্যে খুনের নেপথ্য হোতাদের চিহ্নিত করে আনা হয়েছে আইনের আওতায়। খুনের মতো অপরাধ বন্ধে নেওয়া হয়েছে নানান পদক্ষেপ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান মৌমিতা পাল মনে করেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে চট্টগ্রামে খুনের ঘটনা বাড়ছে।
অপরাধীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে না পারলে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কঠিন হয়ে পড়বে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল বলেন, প্রত্যেকটা খুনের ঘটনা গুরুত্বের সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সিংহভাগকেই আনা হয়েছে আইনের আওতায়।
সিএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, নগরীতে যত খুন হয়েছে তার প্রায় সব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হচ্ছে। সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থা জিরো ট্রলারেন্স।