বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য

করোনা ও চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ও করোনা মহামারির পর বিশ্বের অনেক কিছুই বদলে গেছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর পশ্চিমা দেশগুলো এখন আর এককভাবে চীননির্ভর থাকতে চাইছে না। আমদানির উৎস বাড়ানোর চেষ্টা করছে তারা। বিশ্ববাণিজ্যের নতুন এ বাস্তবতায় লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত এক জরিপের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। এই জরিপ করা হয়েছে অর্থনীতিবিদদের ওপর।

অর্থনীতিবিদরা এই জরিপে বলেছেন, এই পরিবর্তনের কিছু সুবিধা বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পাচ্ছে। এ সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে নানা ধরনের সংস্কার করতে হবে। নিয়ম-নীতি সংশোধন থেকে শুরু করে অবকাঠামো খাতে বড় পরিবর্তন করতে হবে। জরিপের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতিবিদেরা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জরিপে অংশ নেওয়া দুই-তৃতীয়াংশের বেশি (৬৮ শতাংশ) অর্থনীতিবিদ এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে আবার ১৮ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, মন্দা তীব্র রূপ নিতে পারে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৩৫ শতাংশের বেশি অর্থনীতিবিদ মনে করতেন, তীব্র মন্দার আশঙ্কা আছে। অর্থাৎ নানা পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অনেক অর্থনীতিবিদ মত বদলেছেন। এখনো এক-তৃতীয়াংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এ বছর মন্দা হবে না। সম্প্রতি গোল্ডম্যান স্যাকসের এক প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, চলতি বছর বৈশ্বিক মন্দা হওয়ার আশঙ্কা কম। কিছু উন্নত দেশে মন্দা হতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে প্রবৃদ্ধির গতি অনেকটাই কমে যাবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদের মতে, এ বছর অর্থনীতিতে রীতিমতো ঝড় বয়ে যাবে। এতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকার স্বার্থে নানা ধরনের ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য হতে পারে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যত না অর্থনৈতিক, এর চেয়ে বেশি রাজনৈতিক কারণে এসব ঘটবে। রাজনৈতিক স্বার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ করবে। আর এর খেসারত দিতে হবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক, বিশেষত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম। জরিপে অংশ নেওয়া সব শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ২০২৩ সালে ইউরোপে দুর্বল প্রবৃদ্ধি হবে বলেই মনে করছেন। ৯১ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধি হলেও এর হার হবে খুবই কম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে আসবে। গত বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় যেভাবে বিশ্বের প্রায় সব কেন্দ্রীয় ব্যাংক একযোগে নীতি সুদহার বাড়িয়েছে, তাতে সমাজে অর্থের প্রবাহ কমেছে। স্বাভাবিকভাবেই কমেছে চাহিদা। সেই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক হয়ে আসছে।

সর্বশেষ খবর