বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নবম-দশম শ্রেণির বইয়ের ভুল স্বীকার করে এনসিটিবির সংশোধন

দায় নিলেন জাফর ইকবাল ও হাসিনা খান

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা বিনামূল্যের বিভিন্ন বইয়ের ভুল নিয়ে সমালোচনা পর ভুল স্বীকার করে সংশোধন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গতকাল এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক ড. সন্তোষ কুমার ঢালী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ-সংক্রান্ত সংশোধন প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইয়ের একটি অংশে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য বলে স্বীকার করে নিয়েছেন বইটির রচনা ও সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত থাকা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান। এজন্য তাঁরা এর দায় স্বীকার করেছেন। গতকাল এনসিটিবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ের ১৮১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।’ প্রকৃতপক্ষে হবে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী নির্যাতন, গণহত্যা আর ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে। ২০০ নম্বর পৃষ্ঠায় দেওয়া হয়েছে, ‘১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।’ পাঠ্যপুস্তকে হবে, ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এ ছাড়া একই বইয়ের ২০২, ২০৩ নম্বর পৃষ্ঠার সংশোধন দেওয়া হয়। একই বিজ্ঞপ্তিতে নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৬, ১৬ ও ২৮ নম্বর পৃষ্ঠা; একই শ্রেণির পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের ৫৭ ও ৫৯ নম্বর পৃষ্ঠার সংশোধন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটির ব্যাপারে অভিযোগ ছিল- এ বইয়ের কোনো কোনো অধ্যায়ের অংশবিশেষ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এডুকেশনাল সাইট থেকে নিয়ে হুবহু অনুবাদ করে ব্যবহার করা হয়েছে। অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক হাসিনা খান গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে বলেন, অভিযোগটি তাঁদের নজরে এসেছে। বইয়ের এই নির্দিষ্ট অংশটুকু এবং ওয়েবসাইটটির একই লেখাটুকু তুলনা করে অভিযোগটি আমাদের কাছে সত্য বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, একটি পাঠ্যপুস্তক রচনার সঙ্গে অনেকে জড়িত থাকেন। কোনো লেখকের লেখা নিয়ে এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তা আমাদের টিমের জন্য হতাশার এবং মন খারাপের কারণ হয়। ওই অধ্যায়ের আলোচিত অংশটুকুর দায় সম্পাদক হিসেবে আমাদের ওপরও বর্তায়, সেটি আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি। পরবর্তী সংস্করণে বইটির প্রয়োজনীয় পরিমার্জন করা হবে বলেও জানান তারা। প্রসঙ্গত, বইটি রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ড. হাসিনা খান, ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব ও রনি বসাক। আর বই সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

 

সর্বশেষ খবর