শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রচারণায় মুখর প্রার্থীরা আগ্রহ নেই ভোটারদের

উপনির্বাচন

প্রতিদিন ডেস্ক

উপনির্বাচনের তৎপরতা আরও বেড়েছে। প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা জোরদার হয়েছে। তবে ভোট নিয়ে ভোটারদের তেমন একটা আগ্রহ দেখা  যাচ্ছে না। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার-২ আসনে উপনির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করতে আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি ও অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গতকাল সকালে এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে সাত্তারের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মাঠে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ জেলা-উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী মণ্ট, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বিএনপির ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে জাতীয় সংসদ থেকে উকিল আবদুস সাত্তার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন। এ জন্য বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু উকিল আবদুস সাত্তার একজন ভালো মানুষ, পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি। এ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই। তাই আওয়ামী লীগ উকিল আবদুস সাত্তারকে সমর্থন দিয়েছে। নির্বাচনে তার জয়ের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হবে আওয়ামী লীগ অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাসী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় কমতি না থাকলেও ভোটারদের মাঝে ভোট নিয়ে তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। উপনির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান (নৌকা), বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম বাচ্চু (মাথাল) ও রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার (আপেল), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক (লাঙ্গল), বিএনএফের নবিউল ইসলাম (টেলিভিশন) এবং জাকের পার্টির গোলাম মোস্তফা (গোলাপ ফুল)। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী গত পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী হয়ে বহিষ্কৃত সাবেক যুবলীগ নেতা সামিউল হক লিটন (আপেল) এবং বিএনএফের কামরুজ্জামান (টেলিভিশন)। এই উপনির্বাচন ঘিরে প্রার্থী-সমর্থক-কর্মীরা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে দিনরাত প্রচার-প্রচারণা চালালেও ভোটারদের মাঝে ভোট নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। দেখা গেছে প্রার্থীরা তাদের মতো করে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপরদিকে ভোটাররা নিজেদের কাজ-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটাররা মনে করছেন, নির্বাচনে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করলে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং নিজ নিজ প্রার্থীদের ভোট দেবেন। তবে এই নির্বাচনে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতি কম হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

বগুড়া : সরব হয়ে উঠেছে বগুড়ার উপনির্বাচনের মাঠ। প্রার্থীরা শেষ সময়ে নির্ঘুমভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রচারণা।

বগুড়া-৬ সদর আসনে নির্বাচনে ১০ জন প্রার্থী প্রতীক পেয়ে মাঠে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। প্রচারণায় এগিয়ে আছেন নৌকার প্রার্থী। তার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে এক ডজন হেভিওয়েট নেতা সপ্তাহব্যাপী নির্বাচনী জনসভা, মতবিনিময়, গণসংযোগসহ নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ ছাড়া লাঙ্গল প্রতীকে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচীব নুরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকে আবদুল মান্নান আকন্দ, কুড়াল প্রতীক নিয়ে সরকার বাদল, মশাল প্রতীকে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমদাদুল হক ইমদাদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আফজাল হোসেন, বটগাছ প্রতীকে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম ও গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও আপেল প্রতীকে মুক্তিযোদ্ধা মাছুদুর রহমান হেলাল, একতারা প্রতীকে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম তৎপর রয়েছেন।

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন মোট ছয়জন। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে ভোটের মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে দলীয় প্রতীক মশাল নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা কামাল, ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের তাজ উদ্দীন মন্ডল ও গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির আবদুর রশিদ সরদার। এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী একতারা প্রতীক নিয়ে মাঠ জমাচ্ছেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। আসনটিতে কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল পেয়েছেন কুড়াল প্রতীক। জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন এই আসন থেকে ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বগুড়া সদর আসনে উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপুকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে গতকাল শহরের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ করেছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতারা। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আবদুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে শহরের রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, কাঁঠালতলা, থানা রোডসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করা হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জালাল মুকুল, কেন্দ্রীয় নেতা মেহেদী হাসান রবিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ভিপি সাজেদুর রহমান সাহীন, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আহসান হাবীব বাধন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এ কে এম এনামুল বারী টুটুল, প্রভাষক মনিরুজ্জামান মনির, গোলাম হোসেন, মোকছেদুল ইসলাম মানিক, আবু বক্কর সিদ্দিকী স্বাধীন, নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, নাজমুল কাদির শিপন, আবদুর রউফ, বনি ছদর খুররম, আরিফুল হক বাপ্পী, মশিউর রহমান মামুন, আয়নাল হক নয়ন, প্রভাষক রাজু, মীর জেবায়ের জয়, মিনাহাজ্জুল হোসেন মিনহাজ, মো. লিটন শেখ, আরিফুল বারী আনজিল, সোহানুল ইসলাম, প্রসেনজিৎ রায় সঞ্জিত, বিজয় শেখসহ জেলা ও শহর শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বগুড়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে একজন দক্ষ যোগ্য প্রতিনিধি প্রয়োজন। নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু একজন পরীক্ষিত রাজনীতিবিদ, তাকে নির্বাচিত করলে বগুড়ার সার্বিক উন্নয়ন হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর