রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীতে ছোঁ মারা পার্টির ১০০ সদস্য সক্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ব্যাগসহ দামি জিনিসপত্র ছোঁ মেরে নিয়ে যাওয়া চক্রের ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত তিন দিনে রাজধানীর উত্তরখানে টানা অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিবি বলছে, ছোঁ মারা এ পার্টির প্রায় ১০০ সক্রিয় সদস্য রয়েছে। প্রত্যেকের দিনপ্রতি অন্তত তিনটি মোবাইল চুরির টার্গেট থাকে। সে হিসাবে ঢাকায় প্রতিদিন অন্তত ৩০০ মোবাইল চুরি হয়। গ্রেফতার ওই ১৬ জন হলেন- মিজান, আমিরুল ইসলাম বাবু, শরিফ হোসেন, হৃদয়, রাজ, সুমন, সোহেল বাবু, হৃদয়, মনিরুজ্জামান, নাজমুল, মনির, ইমরান, ফারুক, আশরাফুল ইসলাম সজীব, আরিফ ও হাসান। তাদের কাছ থেকে একটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল, ৫০টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল, চারটি চাকু, দুই জোড়া স্বর্ণের দুল এবং নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, বাস, ট্রেন বা প্রাইভেট কারে চলাচলকারী যাত্রীরা মোবাইলে কথা বলার সময় জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে যায় চক্রটি। এ ছাড়া গাড়ির জানালা দিয়ে যাত্রীদের বা পথচারীদের ব্যাগ, স্বর্ণের চেইন, ল্যাপটপ নিয়ে যায় তারা। ছিনতাইয়ের পর নামমাত্র দামে মোবাইলসহ বিভিন্ন পণ্য মহাজনদের কাছে বিক্রি করে চক্রের সদস্যরা। এরপর মহাজনরা নির্ধারিত দোকানে সেসব বিক্রি করে দেয়। দোকানিরা এর মধ্যে তুলনামূলক কম দামি মোবাইল খুচরা বাজারে বিক্রি করে। তবে দামি মোবাইলের যন্ত্রাংশ খুলে বাজারে বিক্রি করে তারা। অনেক ক্ষেত্রে দামি মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রি করে তারা। মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, উত্তরখানে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে কিছু মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ছোঁ মারা চক্রটি মহাখালী থেকে টঙ্গী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এলাকায় ১৫-১৬টি স্পটে ছিনতাই চালিয়ে আসছিল।

মিজান, জয়, বাবু ও শরীফের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা বাস, প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রীদের কাছ থেকে ছোঁ মেরে মোবাইল ফোন, ব্যাগ ও গলার চেইনসহ মূল্যবান মালামাল কেড়ে নেয়। এরপর সেসব চোরাই সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়কারী সুমন, ফারুক ও আশরাফুল ইসলাম সজীবের মাধ্যমে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে দোকানে বিক্রি করে।

তিনি বলেন, গ্রেফতার অভিযুক্তদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। সাধারণত মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে ছিনতাই করে তারা। কখনো কখনো দলনেতা তথা মহাজনরাই তাদের মাদক সরবরাহ করে, যাতে তাদের দিয়ে ছিনতাই চালিয়ে নেওয়া যায়। চক্রের সদস্যরা গ্রেফতার হলে তাদের জামিন করানো এবং পরিবারকে অর্থ দিয়ে সহায়তাও করে থাকে এ মহাজনরা। এ অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ডিবি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান জানান, ১, ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি বনানী, বিমানবন্দর, আবদুল্লাহপুর, ফায়দাবাদ, টঙ্গী এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে চক্রের মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর থেকে টঙ্গী, আবদুল্লাহপুর, হাউস বিল্ডিং, জসীমউদ্দীন, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, বিশ্বরোড, র‌্যাডিসনের মোড়, বনানী, কাকলী ও মহাখালী পর্যন্ত থাপা দিয়ে ছিনতাই করে আসছিল। তাদের সবার নামে গাজীপুর এবং ডিএমপিতে একাধিক মামলা আছে।

সর্বশেষ খবর