শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাড়ছেই মাছ মুরগি ডিমের দাম

বাজার দর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম

বাড়ছেই মাছ মুরগি ডিমের দাম

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। বাড়ছেই মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম। সাধারণ মানুষ দিশাহারা। বাজার ঘুরে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে তা এখন ২২০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি ব্যবসায়ী ও ফার্মের মালিকরা খাবারের দাম ও সরবরাহের খরচ বৃদ্ধির কথা বলে মুরগির দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন।

দাম বৃদ্ধি নিয়ে শনিরআখড়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেন বলেন, গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ১৯০-২০০ টাকা প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি। গতকাল রাতে যা পাইকারি বাজার থেকে কিনেছি তা আজ সকালে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বাড়ার ফলে বিক্রি কমে গেছে। এতে লোকসানই হচ্ছে।

নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি নিয়ে অনেকটা ক্ষুব্ধ ও হতাশ নিম্ন আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্তরা। তারা বলছেন, দামের কারণে গরু কিংবা খাসির মাংস অনেক আগে থেকেই নাগালের বাইরে ছিল। এখন ব্রয়লার মুরগির দামও নাগালের বাইরে। এ অবস্থায় সপ্তাহে অন্তত এক দিনও মাংস খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, ২৮০-৩০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছিল। এ ছাড়া দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রতি ডজন ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে আরও ৫-১০ টাকা বেশি দামে। হাঁসের ডিমের ডজন এখন ২১০-২২০ টাকা। গরু ও খাসির মাংস আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কমপক্ষে ৪০ টাকা। সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায় ও খাসির মাংস ১০০০-১১০০ টাকায়। ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি কাতলা মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-২২০ টাকা, রুই আকার অনুযায়ী ৩০০-৩৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা আকার অনুযায়ী ৪০০-৫০০ টাকা, শোল আকার অনুযায়ী ৬০০-৮০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৭০-১৮০ টাকা, কই ২৫০-৩০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা, লম্বা ও গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৬০-৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৩০-৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, ঢেঁড়স ৬০, কচুর লতি ৬০-৭০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ৮০ টাকা ও ধুন্দুল ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চট্টগ্রামে ফের বেড়েই চলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। গত সপ্তাহে ১৭০ টাকা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ছুঁয়েছে ২০০ টাকা। পাশাপাশি গত সপ্তাহেও রসুনের কেজি ছিল ১৪০ টাকা। এ সপ্তাহে একলাফে ডাবল দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। বিক্রেতারা বলছেন, বাচ্চা সংকট এবং খাদ্যের দাম বাড়ায় লাগামহীন হয়ে গেছে মুরগির দাম। শুক্রবার নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি লাউ ৩০-৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শিম ৫০-৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা, শালগম ৩০-৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা এবং শিমের বিচি ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুর রাজ্জাক বলেন, এভাবে প্রতি সপ্তাহে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লেও বেতন বাড়ার কথা তো অনেক দূরে, এখনো বেতন পাইনি। কেন, কী কারণে দাম বাড়ছে তা বের করে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে দুই সপ্তাহ ধরে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

সোনালি ৩০০, দেশি মুরগি ৪৮০-৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির ডিম গত সপ্তাহে ডজন ১৩০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৩৫ ও দেশি ডিম ২৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। মুরগি বিক্রেতা আবদুল হাকিম বলেন, মুরগির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। আগে মুরগির বাচ্চা আনতাম ২২ টাকা করে সেটা এখন আনতে হচ্ছে ৭৫ টাকা, ৮০ টাকা করে। মুরগি কিংবা ডিমে কম দামে বিক্রি করার সুযোগ  নেই। কারণ সব দিকেই খরচ বাড়তি। অন্যদিকে এখনো কমেনি কাঁচা মরিচের দাম। এক মাস ধরে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। গত সপ্তাহে ১৩০ টাকায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে কেজি ১২০ টাকা। পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, আদা ১২০ টাকা ও রসুন ২২০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৭০০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর