সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আগামী ৪ মার্চ স্থানীয় সময় দুপুরে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এদিন ট্রাম্পের আদালতে হাজির হওয়া নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি
খবরে বলা হয়, এরই মধ্যে ট্রাম্প আদালতে হাজির হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তিনি ফ্লোরিডা থেকে তার ব্যক্তিগত বিমানে করে নিউইয়র্কের আদালতে যাবেন। এ সময় তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ফেডারেল এজেন্টরা থাকবেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার তার ব্যক্তিগত প্লেনে নিউইয়র্কে যাবেন এবং মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
খবরে আরও বলা হয়, আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলতে পারে এ শুনানি। এ সময় ট্রাম্পকে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হবে। আদালতে ট্রাম্পের আত্মসমর্পণকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছেন এফবিআই, এনআইপিডি, সিক্রেট সার্ভিস ও নিউইয়র্ক সিটি কোর্ট কর্মকর্তারা। ট্রাম্পের আদালতে যাওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সিক্রেট সার্ভিসের শতাধিক সদস্য জড়িত থাকবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্পকে হাতকড়া পরানো হবে না। কারণ সাধারণত যাদের ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়, তাদের হাতকড়া পরানো হয়। ট্রাম্পের আইনজীবী জো ট্যাকোপিনা বলেন, ‘ট্রাম্প মঙ্গলবার আদালতে যেতে পারেন। তবে সেটি নিশ্চিত নয়।’ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা সম্ভাব্য পরিস্থিতিগুলোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন- যার মধ্যে ট্রাম্প, প্রসিকিউটর, বিচারক বা জনসাধারণের সদস্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝুঁঁকি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কারণ এরই মধ্যে জেলা অ্যাটর্নির অফিস ‘অনেক হুমকি’ পেয়েছে। এদিকে আদালত এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকলেও ট্রাম্পের আত্মসমর্পণের বিষয়টি মাথায় রেখে গোটা এলাকায় ব্যারিকেড দিতে দেখা গেছে। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা টহল দিচ্ছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট আদালতে আসার সময় পুরো এলাকা লকডাউন করে দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভও হতে পারে বলে ধারণা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। এ কারণে রাজধানী ওয়াশিংটনে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে ইউএস ক্যাপিটল পুলিশ। খবরে বলা হয়, গত শুক্রবারই ট্রাম্পকে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিল ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস। কিন্তু নিরাপত্তার কথা বলে তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। এদিকে ট্রাম্প বিচারকদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এ ছাড়া ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে আগামী নির্বাচন প্রভাবিত করতে বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন রিপাবলিকান স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি।
এদিকে সাংবাদিকরা জানতে চাইলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে অভিযোগগুলো নিয়ে ট্রাম্প মোটেও উদ্বিগ্ন নন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী জো ট্যাকোপিনা। এরই মধ্যে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক নিপীড়ন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি অ্যাটর্নি ব্র্যাগকে ‘কলঙ্ক’ বলে আক্রমণ করেন এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেন, এই সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদেরই ক্ষতি করবে।