শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

শেষ মুহূর্তে ভিড় আতর টুপি জায়নামাজের দোকানে

মোস্তফা মতিহার

শেষ মুহূর্তে ভিড় আতর টুপি জায়নামাজের দোকানে

বিদায় নিচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর সমাগত। আর তাই মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে ঈদের আনন্দের ঝিলিক বইছে। উচ্ছ্বাস আর উল্লাসের ঢেউ আছড়ে পড়েছে প্রতিটি মুসলমানের ঘরে। ঈদ উদযাপনে আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের সঙ্গে থাকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য। ঈদের নামাজকে কেন্দ্র করেই মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসব আবর্তিত হয় বলে সব ধরনের কেনাকাটার পরে ঈদ উদযাপনের কেনাকাটার সর্বশেষ অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে টুপি, জায়নামাজ ও আতর। যার কারণে শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, জুতা, জুয়েলারি, কসমেটিকসসহ সব ধরনের ঈদ কেনাকাটার পর ফ্যাশনের পাশাপাশি পবিত্রতার বন্ধনে নিজেদেরকে বাঁধার প্রত্যয়ে টুপি, জায়নামাজ ও আতরের দোকানে দোকানে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের ভিড়। নান্দনিক ডিজাইনের টুপি ও জায়নামাজ এবং মনকাড়া আকর্ষণীয় পাথরের তসবিহ ও মোহনীয় সুগন্ধীর আতর কিনতে রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ছোটাছুটি করছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেট ও এর আশপাশের এলাকা। এখানে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের আতর, টুপি, তসবিহ ও জায়নামাজ। মোহনীয় সুগন্ধির আতর, নান্দনিক ডিজাইনের টুপি, তসবিহ ও জায়নামাজের বিশাল সমাহার নিয়ে দোকান সাজিয়েছে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের বরকতি আতর ঘর। বরকতি আতর ঘরের কালেকশনে রয়েছে টুপি, জায়নামাজ, তসবিহ ও আতরের প্রায় শতাধিক কালেকশন। বরকতি আতর ঘরের কর্ণধার আবদুল গাফফার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, তার দোকানে আজমল অ্যান্ড কোম্পানির হাত কড়া উদ পাওয়া যাচ্ছে ২২ হাজার টাকায়, সুরাতি কোম্পানির মাতাক পাওয়া যাচ্ছে ২২ হাজার টাকায়, কায়সার আতর পাওয়া যাচ্ছে ১৪ হাজার টাকায়, তুবার দাম ১৮ হাজার টাকা, হারামাইন কোম্পানির আফফাফ ৮ হাজার টাকা প্যাকেট। এ ছাড়া মাহফুজ, মুবাখখার, হানিন, নূরা, মিকাত, শায়খা, মিনা পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়। অ্যারাবিয়ান উদ, লামসা, আলমাস, স্টাইলিশ পিংক, উদ এলিট, উদ পারফিউম, জিকরিয়াত, ক্রাউন, লুলু পাওয়া যাচ্ছে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকায়। নতুন এসব ব্র্যান্ড ছাড়াও এই দোকানের পুরনো সমাহারের মধ্যে রয়েছে মরিয়ম আতর, দেহনেল উদ, হোয়াইট আম্বার, মুখাল্লাত আরাইস, উদ আল সুলতান, মাহমুদ, সাবা, বেলি, রজনীগন্ধা, এরাবিয়ান উদ, উদ এলিট, মাস আল কাবা, মেশক আম্বার, কস্তুরি, শামামাতুল আম্বার, হুগো বস, বাখুর, সুলতান, হাজার, মদিনা, দিনার, মক্কার আবদুল সামাদ আল কুরাইশ কোম্পানির প্রসিদ্ধ আতর হেরিটেজ ব্লেন্ড, আজমল কোম্পানির আনভেইল, আল থোরাইয়া, জাহি, জাজাব আল উদ, মাশাল্লাহ, ঘায়ের, মোখাল্লাদ দেহনেয়াল উদ মোয়াত্তাক, হজরে আসওয়াদ ইত্যাদি। সিলভারের কাজ করা জর্ডানের টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায়, সৌদি টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়, চায়না টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৭৫ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, ইরানের টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকায়। মিসরের টুপির দাম ১ হাজার ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। তুর্কি টুপি (রুমি টুপি) ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা, সুদানি টুপি ১ হাজার ৫০০ টাকা, গুজরাটের বুরি টুপি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, নাইজেরিয়ান টুপি আড়াই হাজার টাকা। এ ছাড়া নরমাল টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দামের মধ্যে। জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকার মধ্যে। এর মধ্যে তুর্কি জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকায়, শেলিন জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়, আইডিন জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ থেকে ৭ হাজার টাকায়, পাকিস্তানি জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, দুবাই ও ইন্ডিয়া থেকে তিনি বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের খোলা আতরগুলো সরাসরি আমদানি করে থাকেন বলেও তিনি জানান। মার্কেটের ভিতরের দোকান ছাড়াও জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটের ফুটপাতের দোকানগুলোতেও উৎসব ও আতরপ্রিয়দের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ফুটপাতের দোকানের টুপির কালেকশনে রয়েছে নেট টুপি, মিরাঠি টুপি, হাজি টুপি, লেইস টুপি ইত্যাদি। এসব দোকানে বাচ্চাদের টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকায়, নেট টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ টাকায়, বিভিন্ন ধরনের নরমাল টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ১৫০ টাকায়, হাজি টুপি পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ৬০০ টাকায়, জালি টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, লম্বা আদি টুপি পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়, মালয়েশিয়ান টুপি পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ৬০০ টাকায়, চায়না টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ১০০ টাকায় ও তুর্কি পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ২০০ টাকায়।

সর্বশেষ খবর