শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
বাজার দর

বাজারে ক্রেতা কম, দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারে ক্রেতা কম, দাম চড়া

ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস ও সবজির দাম গতকাল পর্যন্ত কমেনি। বরং ঈদের পরে কয়েক দিনে নতুন করে বেড়েছে আলু ও পিঁয়াজের দাম। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে নানা পদের সবজির দামও। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৬০ টাকা দরে। এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ আগে গরুর মাংসের দাম সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ঠেকে। এখন চাহিদা কমলেও কমেনি দাম। বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। রায়েরবাগ বাজারের মাংস বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, মাংসের দাম এখনো বাড়তি রয়েছে। এ দেশে একবার দাম বাড়লে আর কমানো যায় না। এখনো ঈদের আগের মতো গরুর দাম রয়েছে। অন্যদিকে ঈদের পরে মানভেদে প্রতি কেজি পিঁয়াজে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ৩৬ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে। আলুর দাম ৫-৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। আলু ও পিঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ শেষে আমদানি ও পাইকারি বাজারের কার্যক্রম স্বাভাবিক না হওয়ায় আড়তে মালের সংকট রয়েছে। আবার সব দোকান না খোলায় পাইকারও কম। সেজন্য পণ্যের দাম বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শসা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। কাঁচা মরিচ ৮০-৯০ টাকা, করলা ৬০-৬৫, ঝিঙা-পটোল ও চিচিঙ্গা ৫০-৭০, টমেটো ৪৫-৫০, পেঁপে ৫৫-৬০, গাজর ৮০-১২০ ও কচুর লতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

এ ছাড়া লাউ ও চাল কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ ও কলার থোড় ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আকারভেদে লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০-৫০ টাকা। কাঁচা কাঁঠাল প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। এ ছাড়া শাকের মধ্যে পাট শাক, ডাঁটা, লাল, ও কলমি শাক প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা, পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫, লাউশাক ২৫-৩০ টাকা এবং পালং শাক আঁটি প্রতি ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা হালিম খান বলেন, বাজারে সরবরাহ যেমন কম, ক্রেতাও কম। কোনো সবজির দাম কমেনি। বরং অনেক সবজির দাম বেড়েছে। অধিকাংশ সবজিই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে শসা ও লেবুর চাহিদা একটু বেশি। অন্যান্য সবজির বাজার আগের মতোই রয়েছে।

চট্টগ্রামে ফের অস্থির মুরগির বাজার : চট্টগাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, রমজানের আগে হঠাৎ করে কেজিতে দাম বেড়ে যায় ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। রমজান শুরু হওয়ার পর প্রশাসনের কঠোরতায় সে দাম কমে বিক্রি হয় ২০০ টাকায়। তবে রমজান শেষ হতে না হতেই আবার চট্টগ্রাম নগরে বেড়েছে মুগরির দাম। ক্রেতারা বলছেন, রমজানে সরকারি নানা সংস্থা তদারকি করলেও এখন সে তদারকি নেই। যার কারণে মুরগি সিন্ডিকেট ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকার পদক্ষেপ নিলে সিন্ডিকেট চিহ্নিত হবে এবং দামও কমে আসবে।

ঈদের দুই দিন আগে বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ছিল ২২০-২৩০ টাকা। ঈদের ঠিক এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই সে মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়। নগরের কাজীর দেউড়ি ও চকবাজার কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি লেয়ার ৩৬০, কক মুরগি ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম বলেন, মুরগি আমদানি কম হওয়া ও পোলট্রি ফিডের দাম বাড়ার কারণে মুরগির দাম বাড়ছে। আমরা যে দামে ক্রয় করি তার থেকে ১৫-২০ টাকা রেখে আমরা বিক্রি করি। কিন্তু বাজারে মুরগি আমদানি না হলে তখন দাম বেড়েই যায়। এ ছাড়া বিদ্যুতের দাম বাড়লেও মুরগিতে তার প্রভাব পড়ে। কারণ ছানা ফোটাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হয়, এরপর খাদ্যের দাম, পরিবহন খরচ সব মিলিয়ে আমরা চাপে পড়ে যাই। তখন কিছুটা লাভ হলেও আমরা পাইকারি ও খুচরা বাজারে একই দামে বিক্রি করি।

সবজির বাজারে প্রতিকেজি পেঁপে ৪০, চিচিঙ্গা ৭০, কুমড়া ৩০, বেগুন ৫০, গাজর ৬০, ঝিঙে ৭০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০, বরবটি ৮০, পটোল ৪০, কাঁকরোল ৯০, ধুন্দল ৯০ ও লতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৬০, পাঙ্গাশ ২২০, পাবদা ৪০০, কই ২৬০ থেকে ২৮০, শিং ৪৫০, চিংড়ি আকারভেদে ৬০০ থেকে ৭০০, কাতল ৩০০, রুই ২৬০, রূপচাঁদা ৯০০, কালিবাউস ৪০০ ও কোরাল ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ঈদের পর পর বেড়েছে আদা, পিঁয়াজ আর রসুনের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দেশি পিঁয়াজ ৪২ টাকা, ৩০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ১৩০, চায়না রসুন ২০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা ও মিয়ানমারের আদা ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর