মঞ্চে নতুন নাটক এনেছে সাংস্কৃতিক সংগঠন কণ্ঠশীলন। নাটকটির নাম ‘তাজমহলের টেন্ডার’। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। ভারতীয় নাট্যকার অজয় শুক্লা রচিত ও অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী অনূদিত এই নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কণ্ঠশীলন অধ্যক্ষ মীর বরকত। বিভিন্ন দেশে সমাজের স্তরে স্তরে সংঘটিত সব ধরনের দুর্নীতিকে কেন্দ্র করেই বিন্যস্ত হয়েছে নাটকটির কাহিনি।
বাদশাহ শাহজাহান মমতাজের স্মৃতি রক্ষার্থে তাজমহল বানানোর ভার দেন চিফ ইঞ্জিনিয়ার গুপ্তাজিকে। ধুরন্ধর গুপ্তাজি ও তার সহকারী সুধীর ব্যবসায়ী ভাইয়াজির সঙ্গে হাত মিলিয়ে শাহজাহানকে ভুল বোঝাতে থাকেন। তারা নানা কৌশলে বাদশাহর চোখে ধুলা দিয়ে তাজমহল বানানোর আগেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ এবং তা আত্মসাৎ করতে থাকেন। বিভিন্ন দফতরের কর্তাব্যক্তি এবং শ্রমিক নেতারাও অবৈধ সুবিধা ভোগের মাধ্যমে গুপ্তাজির অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করতে থাকেন। এসব কারণে সম্রাটের আকাক্সক্ষা পূরণে চরম বিঘ্ন ঘটতে শুরু করে এবং তাজমহল নির্মাণে সময়ক্ষেপণ হতে থাকে। শাহজাহান হতাশ হতে থাকেন আর ভাবতে থাকেন তার স্বপ্ন কি অধরাই থেকে যাবে? পঁচিশ বছরেও তাজমহলের টেন্ডার বের হয় না। তবে মৃত্যুর আগে সম্রাট শাহজাহান গুপ্তাজির ধোঁকাবাজি বুঝতে পারেন। তাই তার জারি করা শাহী ফরমান বলে গুপ্তাজি এবং তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়। ‘তাজমহলের টেন্ডার’-এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- সোহেল রানা, সালাম খোকন, জে. এম মারুফ সিদ্দিকী, মোস্তফা কামাল, আইরিন খানম, আহমাদুল হাসান হাসনু, শফিকুল ইসলাম শফি, আল মামুন সিদ্দিক, অনন্যা গোস্বামী, অপরেশ সাহা, শফিক সিদ্দিকী, নিবিড় রহমান, মো. আবদুল কাইয়ুম, ইকবাল হোসেন।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক মীর বরকত বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক সফিকুন্নবী সামাদী উর্দু-হিন্দি সাহিত্য অনুবাদে সিদ্ধহস্ত। একটি হাস্যরসাত্মক নাটক অনুবাদের জন্য তাকে অনুরোধ করেছিলাম। ভারতের বিশিষ্ট নাট্যকার অজয় শুক্লার ‘তাজমহল কা টেন্ডার’ নাটকটি অনুবাদ করে তিনি আমাদের দেন। প্রথম পাঠেই দলের সদস্যরা নাটকটি পছন্দ করেন। একটি ঐতিহাসিক বিষয় অবলম্বনে কাল্পনিক কাহিনির পরম্পরা সাজিয়ে নাটকটি হাস্যরসাত্মক ও চিরন্তন করে তুলেছেন নাট্যকার অজয় শুক্লা। ড. সামাদীর সহজ-সরল অনুবাদ কাজে লাগিয়ে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয়ের মাধ্যমে হাস্যরস ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।