মুন্সীগঞ্জ-১ (শ্রীনগর ও সিরাজদিখান) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী। নির্বাচনি জোটের কারণে গত নির্বাচনে এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। এবার একচুলও ছাড় দিতে নারাজ দলটির স্থানীয় নেতারা। তারা চান দলের প্রার্থী। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে আলাদাভাবে উঠান বৈঠক, গণসংযোগ আর সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নেতা-কর্মীদের পুনরুজ্জীবিত করে দলকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা না দিলেও দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের শ্রীনগর ও সিরাজদিখান এ দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগে দলাদলি আছে। বিরোধী বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যেও বিরোধ প্রকাশ্য। বড় দুই দলেই দ্বন্দ্ব আছে। এ দ্বন্দ্ব কোথাও দুই, কোথাও তিন ভাগে বিভক্ত। সংঘাত-সংঘর্ষও ঘটেছে একাধিকবার।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সবকিছু ছাপিয়ে মুন্সীগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে পরিবর্তন চায় সাধারণ মানুষ। তারা মনে করে, কোনো জোট থেকে নয়, সরাসরি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিলে স্থানীয় উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে। এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের সাবেক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির, সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরে আলম চৌধুরী। বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন দলের সিরাজদিখান উপজেলা আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মমিন আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য মো. ফরহাদ হোসেন। এবারও বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীর নির্বাচন করবেন। জানতে চাইলে সংসদ সদস্য মাহি বি চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি আশা করি আমাকেই অতীতের মতো নির্বাচনি জোটের প্রার্থী করা হবে। আমাকে প্রার্থী করা হলে, বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়ে জোটের হাত শক্তিশালী করব।’
জানতে চাইলে ডা. বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে নৌকার জয় নিশ্চিত করব।’ তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের তথ্যচিত্র সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন বলেও জানান। আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী চায়। নৌকার ভাড়া দিতে চায় না। কারণ নৌকা ভাড়া দিলে দলের নেতা-কর্মীরা বড় অসহায়। সে কারণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে দাবি, আওয়ামী লীগের যাকেই নৌকা দেওয়া হোক, দলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে নৌকাকে বিজয়ী করব। তারপরও নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন-আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে। কারণ বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে দেশ থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে, আমরা ভালো থাকব।’ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে শেখ মো. আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে মনোনয়ন চাইব।’ বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে আমি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী।’
জাতীয় পার্টির হয়ে এ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সিরাজুল ইসলাম। মনোনয়নপ্রত্যাশী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’