রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আসামি রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন ও আসাদুল ইসলামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডিত আসামিদের ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছরের কারাভোগ করতে হবে। গতকাল ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুরশিদ আহম্মেদ এ রায় ঘোষণা করেন। অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ও মহিন উদ্দিনকে খালাস প্রদান করেন আদালত। তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট নন নিহত রেণুর ছেলে তাসীন আল মাহির ও মেয়ে তাসমিন মাহিরা তুবা। তারা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেছিলেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ছেলে তাসীন আল মাহির বলেন, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণুকে পিটিয়ে আহত করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিন বাড্ডা থানায় ৪০০-৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেণুর ভাগ্নে নাসির উদ্দিন। এরপর ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আবদুল হক। ২০২১ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতিমা ইমরোজ ক্ষণিকা ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ৩৬ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
অভিযোগ গঠনের আওতায় থাকা ১৩ আসামি হলেন- ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ও মহিন উদ্দিন। এ ছাড়া আসামি জাফর হোসেন পাটোয়ারী ও ওয়াসিম আহমেদ অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।