জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। যেসব নাগরিকের এনআইডি-সংক্রান্ত আবেদন দীর্ঘদিন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে; তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য সময় বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে ইসি। এ জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে বক্তব্য না দিলে বা যৌক্তিক বক্তব্য না দিলে সেই আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।
জানা গেছে, বর্তমানে মাঠপর্যায়ে ১০টি নির্বাচনি অঞ্চলে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৫১৬টি এনআইডি আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৪টি আবেদন। আর তথ্য কিংবা দলিলাদি জটিলতা-সংক্রান্ত আবেদন ঝুলে আছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ২২২টি।
জানা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই অনিষ্পন্ন অবস্থায় ঝুলে আছে আবেদনগুলো। আবার কারও কারও আবেদনের সঙ্গে যথাযথ দলিলাদি নেই। আবার কারও আবেদন ক্যাটাগরি (আবেদনের ধরন নির্ধারণ) করা হয়নি। বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইসি সচিব শফিউল আজিম ইতোমধ্যে মাঠ কর্মকর্তাদের আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এক লিখিত নির্দেশনায় তিনি আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের বলেছেন, যেসব আবেদন দীর্ঘদিন ‘তদন্ত প্রয়োজন’, এসব আবেদন নিষ্পন্ন করার জন্য ১৪ দিনের সময় দিয়ে ডাকযোগে তদন্তের নোটিস পাঠাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্তে উপস্থিত না হলে আবেদন বাতিলের সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন-সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রমে ‘সহকারী উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসারদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরেজমিন তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন আবেদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রে বিদ্যমান তথ্যে ভুল থাকার কারণ এবং চাহিত সংশোধিত তথ্য কোন উদ্দেশ্যে চাওয়া হচ্ছে তা তদন্ত প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। অন্যদিকে নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভোটারের ছবি তোলার তারিখ, সময় এবং দলিলাদি প্রয়োজন হবে কি না, তা সিস্টেমে জানাতে হবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, ‘আমরা কর্মকর্তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) যদি পরিবর্তন করতে হয়, আমরা সেটাও করব। এখন এনআইডি আবেদন তো ফেলে রাখার সুযোগ নেই। আমরা যেভাবে অঞ্চলভেদে বৈঠক করেছি। ১০ অঞ্চলে সভা করে যে সুপারিশগুলো আসছে, সেখান থেকে ইতোমধ্যে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবার অন্য রকমও আছে। কেউ কেউ তো বাবা-মায়ের নামও পরিবর্তন করতে চায়। আমরা তো এটা কোনো দিনও দেব না। এটা সঙ্গে সঙ্গে বলে দেব কোনো দিনও আমরা দিতে পারব না। আমরা তার এসএসসির সার্টিফিকেট দিয়ে আগে তার সব রেডি করেছি, এখন বলতেছে যে না, আমি তো এইট পাস। এইটাও আরেকটা দুই নম্বরি। সেসব ফাঁকফোকরগুলোও শেষ হয়ে গেলে এনআইডি সেবা উন্নতি হবে।’