এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে থাকা সব শেয়ার ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। জনতা ব্যাংকের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে আদালতে দায়ের হওয়া এক মামলায় এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত ঋণ প্রদান ও আদায়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। অর্থ ঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক এস আলমের মালিকানাধীন ব্যাংক ছিল। সেখানে সাইফুল আলমের শেয়ার আছে। সেসব শেয়ার ক্রোক করে জনতা ব্যাংকের সমুদয় পাওনা আদায়ের জন্য আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়া ঋণ প্রদান ও আদায়ে অনিয়মের বিষয় দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’ জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাইফুল আলমসহ ১০ ব্যক্তি ও এস আলম গ্রুপের পরিচালনাধীন ১৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গতকাল আদালতে মামলা দায়ের হয়। জনতা ব্যাংক, চট্টগ্রাম করপোরেট শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক বাদল কান্তি দাশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১০ জনকে বিবাদী করা হয়। তারা সবাই এস আলম গ্রুপের ঋণ গ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে আছেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের নামে জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের করপোরেট শাখা থেকে নেওয়া ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়ে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। পুনঃতফসিলের পর ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শেষ হয়।
ঋণ অনাদায়ী থাকা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলে সাইফুল আলমসহ বিবাদী ব্যক্তিরা পালিয়ে যান। গত ৯ অক্টোবর ঋণ পুনর্নবায়ন সুবিধা বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ অবস্থায় খেলাপি ঋণ আদায়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় জনতা ব্যাংক। মামলার আরজিতে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাইফুল আলমের অনৈতিক প্রভাব ও চাপে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এস আলম গ্রুপকে বড় অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর করতে বাধ্য হয়।