পশ্চিমাঞ্চল রেলের ৭৫৩ গেটকিপারের বেতন বন্ধ। গত ছয় মাস ধরে তারা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব গেটকিপার। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব গেটকিপার নিয়োগ পেয়েছিলেন একটি প্রকল্পে। ওই প্রকল্পে এখন কোনো টাকা নেই। এ কারণে তাদের বেতন দিতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ। আবার তাদের চাকরি রাজস্ব খাতেও নেওয়া
হচ্ছে না। গেটকিপারদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য ২০১৯ সালের আগস্টেই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় পশ্চিম রেল। প্রস্তাবটি রেল মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যায় অর্থ বিভাগে। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগ চিঠি দিয়ে জানায়, ১৯৯৭ সালের জুলাই এবং তার পরবর্তী সময়ে শুরু হওয়া কোনো প্রকল্পের চাকরি এই মুহূর্তে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুযোগ নেই। ফলে বেতন পাচ্ছেন না গেটকিপাররা। জানা গেছে, ‘পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন’ নামক একটি প্রকল্পে ২০১৫ সালের ১ জুলাই অনুমোদন পায়। প্রকল্পটির আওতায় ২০১৬ সালে সব বিধিবিধান মেনেই ৮৫১ জন গেটকিপার নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে চাকরিতে আছেন ৭৫৩ জন। ওই প্রকল্পের আওতায় গেট রক্ষণ ঘর নির্মাণ, রোড সারফেস মেরামত, গেটে প্রতিবন্ধক স্থাপন, চেক রেল, বেয়ারিং প্লেট, চেক বোল্টসহ বিভিন্ন কাজ হয়। প্রকল্পটির অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও শুধু গেটকিপারদের বেতন রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়ায় প্রকল্পটি এখনো শেষ হয়নি। গেটকিপাররা প্রায় ২০ হাজার টাকা বেতন পেতেন। শুধু গেটকিপারদের বেতন-ভাতার জন্য প্রকল্প দ্বিতীয় দফা বাড়িয়ে ১১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা করা হয়। ওই টাকা শেষ হওয়ার পরে প্রকল্প ব্যয় ফের ১৩০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু সংশোধিত তৃতীয় দফার বর্ধিত প্রকল্প ব্যয় এখনো অনুমোদন হয়নি। প্রকল্প পরিচালক বীরবল মন্ডল বলেন, ‘এখন প্রকল্পের তহবিলে কোনো টাকা নেই। ফলে গেটকিপারদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে বরাদ্দ পাওয়া গেলে বেতন দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে সেটার সম্ভাবনা আপাতত কম।
