খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অচলাবস্থার নিরসন হয়নি। ৪ মে থেকে কুয়েটে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হলেও গতকাল তৃতীয় দিনেও ক্লাসে যাননি শিক্ষকরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী না থাকায় ক্লাসরুমগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। মেঝে ও চেয়ার-টেবিলে ধুলোর আস্তরণ জমেছে। এই অবস্থায় শিক্ষাকার্যক্রম চালুর আকুতি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকরা বলছেন, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা ও কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। তবে এতে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। তারা গতকাল ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকদের কাছে গিয়ে যত দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুরোধ করেন। জানা যায়, কুয়েট ১৯ ব্যাচের ৩ বছর ১০ মাসে সেশন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে প্রায় সাড়ে ৫ বছর সময় পার হলেও শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে কুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২৩ এপ্রিল কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা ও ইউজিসির প্রতিনিধিদল পক্ষপাতিত্বমূলক ভূমিকা পালন করেছে তাতে শিক্ষকরা উপেক্ষিত হয়েছেন। কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষকরা সাইবার বুলিং, সামাজিক অবমাননা ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া কুয়েটে সহিংসতা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সব প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকবেন।’
তবে শিক্ষকদের কাছে উদ্ভূত ঘটনায় এর মধ্যে দুই দফায় ক্ষমা চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরপরও শিক্ষকরা ক্লাসে না ফেরায় বিপাকে পড়েছেন ৭ হাজার ৫৬৫ জন শিক্ষার্থী। কবে থেকে আবার ক্লাস শুরু হবে তা এখনো অনিশ্চিত। কুয়েট শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম জানান, কুয়েটে আগে থেকেই দেড় বছরের সেশনজট রয়েছে। তারপর গত আড়াই মাস ধরে কোনো ক্লাস- পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ভুলত্রুটির জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যেতে চাই। কুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সৃষ্ট সংকট নিরসনের চেষ্টা করছেন উপাচার্য। উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।