নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও নানা বৈচিত্র্যতায় ভরপুর চারপাশ। সবুজের বুক চিড়ে অবিরাম ঝরছে জলধারা। মিশে যাচ্ছে হ্রদ-পাহাড়ের বুকে। শুষ্ক জলকণাগুলো নীল আকাশে তৈরি করছে শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা। যেন স্নিগ্ধতার পরশ এঁকেছে পাহাড়ি ঝরনাগুলো। বলা হচ্ছে রাঙামাটিজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য ঝরনার কথা। শুষ্ক মৌসুমে মরে যাওয়া ঝরনাগুলো বর্ষায় প্রাণবন্ত। তাই এ বৈচিত্র্যময় পরিবেশের টানে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির বরকল উপজেলায় ছোটবড় অন্তত ৮টি ঝরনা রয়েছে। এর মধ্যে গিরিনির্ঝর ঝরনা বেশ আকর্ষণীয়। বর্ষায় প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে জলধারার অবিরাম পতনের দৃশ্য যে কারও নজর কাড়বে। পাহাড়ি ঝিরিগুলোর জলরাশি মিলে যায় কাপ্তাই হ্রদে। রাঙামাটির এ ঝরনা বহু আগেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক পরিচিত।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌ-ঘাটের ব্যবস্থাপক ফকরুল ইসলাম জানান, শুষ্ক মৌসুমে ঝরনার জলধারা শুকিয়ে গেলেও বর্ষায় নিজ রূপে ফেরে। বর্তমানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এগুলোর সৌন্দর্য আরও বেড়েছে। যার কারণে আমাদের ব্যবসাও চাঙা। হোটেলে পর্যটক কম থাকলেও ঝরনা দেখতে যাচ্ছেন অনেকে। তাই ভাড়া হচ্ছে বোট।
টানা বৃষ্টিতে নবরূপ ধারণ করেছে ঘাগড়া কলাবাগান ঝরনাও। এ ঝরনার পানির শব্দ শোনা যায় দূর থেকেও। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের পাশে এর অবস্থান। তাই দূরদূরান্তের পর্যটক না থাকলেও স্থানীয়দের সরব উপস্থিতি রয়েছে এর কেন্দ্রে। অভিযোগ রয়েছে, জেলাজুড়ে অসংখ্য সম্ভাবনাময় ঝরনার স্পট থাকলেও এগুলো ঘিরে গড়ে ওঠেনি পর্যটন কেন্দ্র। অরক্ষিত ঝরনা স্পট বিলীন হয়ে যাচ্ছে নীরবে। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘বর্ষায় নতুন রূপে সেজেছে পাহাড়। রাঙামাটিতে অসংখ্য ছোটবড় পাহাড়ি ঝরনা থাকলেও বিস্ময়কর প্রাচুর্য শুধু বরকল উপজেলার শুভলং ইউনিয়নে দৃশ্যমান। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় অস্থিত্ব সংকটে রয়েছে সেটা। ঝরনাগুলো বাঁচিয়ে রাখা গেলে রাঙামাটিতে পর্যটকের অভাব হবে না।’