রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) এবং তার দুই সহযোগী মো. রবিন (২৮) ও মো. ফয়সালের (৩০) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মামুনুর রশিদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আশরাফ মাসুম জানান, দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোতালেব হোসেন। তিনি আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামি অনিন্দ্য রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিউল আলম লাটকুর ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় বাড়ির পাশেই ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন অনিন্দ্য। শনিবার ভোররাত থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ওই কোচিং সেন্টারে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় দুই সহযোগীসহ অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দুরবিন, জিপিএস, স্নাইপার স্কোপ, দেশি অস্ত্র, বিদেশি ধারালো ডেগার, উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, টিজার গান, অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ এবং নাইট্রোজেন কার্টিজ। অনিন্দ্য ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। এ ছাড়া গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় ‘সন্দেহভাজন জঙ্গি’ হিসেবে তাকেও ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুটি মামলা থেকে রেহাই পান বলে অভিযোগ আছে। এ দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি শরিফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অনিন্দ্যর সহপাঠী ছিলেন। শরিফুলের সঙ্গে অনিন্দ্যর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ছিল। এবার দুই সহযোগীসহ অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শনিবার রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।