খুলনার মুজগুন্নিতে বাস্তুহারা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। বিক্ষুব্ধরা একপর্যায়ে পুলিশের দুই সদস্যকে একটি বাড়িতে আটকে রাখেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে তাদের ছাড়িয়ে নেন। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ বয়রা হাউজিং স্টেটের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিতে শুরু থেকে বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। উচ্ছেদ অভিযানে বুলডোজারের সামনে শত শত নারী-পুরুষ দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয়রা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা দুই পুলিশ সদস্যকে প্রায় দুই ঘণ্টা একটি বাড়িতে আটকে রাখেন।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান জানান, মুজগুন্নির এ জায়গা ১৯৮৮ সালে বয়রা হাউজিং স্টেট প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণ ও লটারির মাধ্যমে ৫৫টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালের দিকে এখানে রাস্তাঘাট অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়। কিন্তু অবৈধ দখলদারির কারণে দীর্ঘদিনেও ৪২টি প্লটের মালিক জায়গা বুঝে পাননি। এখানে গত আট মাসে তিনবার উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়।
কিন্তু স্থানীয় একটি পক্ষ উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, বাস্তুহারার ওই জমিতে থাকা ১৭২টি পরিবার দীর্ঘ ৪০-৫০ বছর ধরে এখানে বাস করছে। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ১৯৮৮ সালের দিকে এ জমি প্লট আকারে বিক্রি করে। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা এখানে থাকছে তারা নিজেদের নামে জমি বরাদ্দ নিতে চায়। তাদের দাবি, এ জমি একসময় জলাভূমি ছিল। তারাই এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে। বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করলে তারা এ জমি ছাড়বে না। তারা পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার দাবি জানায়।
খালিশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী বলেন, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে যায়। পথে পথে থাকা প্রতিবন্ধকতা সরাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। টায়ারে আগুন জ্বালানো হয়। তাদের হামলায় অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়। উ™ূ¢ত পরিস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে।