মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৬০ শতাংশ মোবাইল অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে, যার ফলে বছরে সরকারের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়ে যাচ্ছে। সংস্থাটির মতে, অবৈধ মোবাইল বিক্রির ফলে রাষ্ট্র যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি সংকটে পড়েছে স্থানীয় কারখানা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি নেতারা এসব বলেন। ব্যবসায়ী নেতারা জানান, দেশে এখন বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল ব্র্যান্ডগুলোর প্রায় সব কটিই উৎপাদন করা হচ্ছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা দেশীয় কারখানা থেকেই মেটানো সম্ভব। কিন্তু অবৈধ মোবাইলের দাপটে স্থানীয় শিল্প পূর্ণ সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না। অবৈধ বেচাকেনায় স্থানীয় নির্মাতাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িয়ে হারিয়ে যাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।
সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, বাজারে অবৈধ মোবাইল ফোনের প্রবাহে দেশীয় শিল্প বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও স্থানীয় কারখানাগুলো এখনো ফোনের দাম বাড়ায়নি। তার দাবি, এনইআইআরকে কেন্দ্র করে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। লাগেজ পার্টিরাই এ ধরনের প্রচারণার সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনইআইআর কার্যকর হলে মোবাইলের দাম বাড়বে না, বরং রাজস্ব আয় কয়েক হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে।
এমআইওবির সহসভাপতি রেজওয়ানুল হক জানান, দেশে শতভাগ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অবৈধ আমদানির কারণে বাজারের চাহিদার মাত্র ৬০ শতাংশ উৎপাদন ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। দেশে উৎপাদন বাড়লেও আইফোনের বাজার এখনো সম্পূর্ণভাবে অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বৈধ বাজারের ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন এমআইওবির প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মোবাইল ফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া, মোবাইল কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, স্যামসাং বাংলাদেশের অনুমোদিত পরিবেশক এক্সেল টেলিকমের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাইফুদ্দিন এবং ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।