নন-এমপিও শিক্ষকদের পূর্বঘোষিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক থেকে সচিবালয়ের দিকে প্রবেশের পথে এ ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চারজনকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সারা দেশের নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করার এক দফা দাবিতে তারা অক্টোবর মাসে টানা ২০ দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় সে সময় তারা ফিরে যান। এরপর ২ নভেম্বর থেকে তারা আবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে সচিবালয় অভিমুখে প্রবেশের চেষ্টা করলে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জের মাধ্যমে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছেন তারা। বর্তমানে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একাধিকবার এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিয়েও সেটি পূরণ করা হচ্ছে না। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। এ ছাড়া শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্দোলনকারীরা। শাহবাগ থানার ওসি
মো. খালিদ মনসুর বলেন, পুলিশের ব্যারিকেড উপেক্ষা করে সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করায় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
৪৭তম বিসিএস পিএসসি ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ : ৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার যৌক্তিক সময় নির্ধারণের দাবিতে পরীক্ষার্থীদের সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ঘেরাও কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ এবং জলকামান নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে দাবি আদায় না হলে পিএসসির সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ৪৭তম বিসিএস প্রিলি. পাস করা পরীক্ষার্থীরা। এর আগে তারা একই দাবিতে কয়েক দিন ধরেই পিএসসিকেন্দ্রিক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশসহ বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোবাশ্বের মোনেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরীক্ষা পেছানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন তারা। আন্দোলনকারীরা জানান, পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ পূর্ববর্তী বিসিএসগুলোতে লিখিত পরীক্ষার জন্য তিন থেকে ছয় মাস সময় দেওয়া হতো। এবার হাতে মিলেছে মাত্র ৪০ দিন। ২৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিক। সময় বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েও পিএসসি পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী রুটিন প্রকাশ করেছে। তারা আরও জানান, এত অল্প সময়ের মধ্যে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার বৃহৎ সিলেবাস শেষ করা অসম্ভব। একদিকে অভিজ্ঞ পরীক্ষার্থীরা রয়েছেন, যারা পূর্বে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে নতুন প্রার্থীরা রয়েছেন, যারা প্রথমবার প্রিলিমিনারি পেরিয়ে লিখিত পরীক্ষায় বসবেন। এ অল্প সময়ে অভিজ্ঞদের প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হলেও নতুনদের পক্ষে তা অসম্ভব। ফলে পিএসসির এই তড়িঘড়ি করে দেওয়া তারিখ পরিবর্তন না করলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শেরেবাংলা থানার ওসি ইমাউল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের পিএসসির সামনে থেকে সরিয়ে দিলে তারা যে যার মতো চলে যান।