পদ্মার চরকেন্দ্রিক অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহী, পাবনা, নাটোর ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএনের যৌথ বাহিনী। এ সময় ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন নামে গড়ে ওঠা অপরাধী গোষ্ঠীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র। অভিযানে পুলিশের রাজশাহী ও খুলনা রেঞ্জের ১২০০ সদস্য অংশ নেন। অভিযান শেষে গতকাল বিকালে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহীর বাঘা, পাবনার বেড়া ও ঈশ্বরদী, নাটোরের লালপুর এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এই বিশেষ অভিযানে অংশ নেন র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএনের ১ হাজার ২০০ সদস্য। পুলিশ রাজশাহী রেঞ্জের অধীন রাজশাহী, পাবনা ও নাটোরে পরিচালিত অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। তবে খুলনা রেঞ্জের অধীন কুষ্টিয়ায় যে অভিযান চলছে, এর কোনো নাম দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি পদ্মার চরকেন্দ্রিক অপরাধ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এর মধ্যে ‘কাকন বাহিনী’র নামে এক অপরাধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথায় কথায় গুলি করে মানুষ হত্যা, চরের বালু ও ফসল লুট, অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর চরের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে তাদের গুলিতে নিহত হন তিন কৃষক। এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ কয়েকজনের নামে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায় মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পদ্মার চরাঞ্চলের সন্ত্রাস নির্মূলে নদীতে ও স্থলভাগে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। অভিযান পরিচালনা করা হয় লালপুরের সীমান্তবর্তী চর দিয়াড় বাহাদুরপুর, চর জাজিরা ও চর লালপুর এলাকায়। ১৪টি নৌকায় ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর চরগুলোতেও বিশেষ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। ভোর ৫টা থেকে জেলার আওতাধীন পদ্মা নদী ও এর চরগুলোয় এই অভিযান চলে। খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শেখ জয়নুদ্দীনের নেতৃত্বে জেলার তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য অভিযানে অংশ নেন। এ সময় চর এলাকায় অপরাধীদের ধরতে ড্রোন দিয়ে বিভিন্ন চরের কাশবন, কলাবাগানসহ জঙ্গলের ভিতর দেখা হয়েছে।